Wednesday, November 5, 2014

অধ্যায়২ঃ গাভী (৬০-৯৬)

স্মরণ করো,
যখন মূসা তার জাতির জন্য পানির দোয়া করলো,
তখন আমরা বললাম,
অমুক পাথরের ওপর তোমার লাঠিটি মারো।
এর ফলে সেখান থেকে বারোটি ঝর্ণাধারা উৎসারিত হলো।
প্রত্যেক গোত্র তার পানি গ্রহণের স্থান জেনে নিল।
(সে সময় এ নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, )
উপাস্য প্রদত্ত রিযিক খাও, পান করো
এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না।৬০

স্মরণ করো, যখন তোমরা বলেছিলে,
“হে মূসা! একই ধরনের খাবার আমাদের ভালো লাগছে না,
তোমার প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করো
যেন তিনি আমাদের জন্য
শাক-সব্জি, গম, রসুন, পেঁয়াজ, ডাল ইত্যাদি
কৃষিজাত দ্রব্যাদি উৎপন্ন করেন।”
তখন মূসা বলেছিল,
“তোমরা কি একটি উৎকৃষ্ট জিনিসের পরিবর্তে
নিকৃষ্ট জিনিস নিতে চাও? 
তাহলে তোমরা কোন নগরে গিয়ে বসবাস করো,
তোমরা যা কিছু চাও সেখানে পেয়ে যাবে।”
অবশেষে অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছলো
যার ফলে লাঞ্ছনা, অধঃপতন, দুরবস্থা ও অনটন
তাদের ওপর চেপে বসলো
এবং উপাস্যের ক্রোধ তাদেরকে ঘিরে ফেললো।
এ ছিল তাদের উপাস্যের বানীসমূহ অস্বীকার করার 
এবং সে বানী প্রচারকদের অন্যায়ভাবে হত্যা করার ফল।
আর এটি ছিল তাদের অবাধ্যতা ও সীমালংঘনের ফল।৬১

নিশ্চিতভাবে জেনে রেখো,
যারা তোমার প্রতি বিশ্বাস রাখে কিংবা ইহুদি, খৃষ্টান বা সাবি
তাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তিই
একাকার উপাস্য ও শেষ সময়ের প্রতি বিশ্বাস রেখে
ভাল কাজ করতে থাকে,
তাদের কাজের প্রতিদান থাকে তাদের প্রভূর কাছে।
আর তাদের উপর কোন ভয় আপতিত হয় না
 এবং তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্তও হয় না।৬২

স্মরণ করো সেই সময়ের কথা
যখন আমরা ‘তূর’কে তোমাদের ওপর উঠিয়ে
তোমাদের থেকে পাকাপোক্ত অঙ্গীকার নিয়েছিলাম
এবং বলেছিলামঃ “যে উপদেশমালা আমরা তোমাদেরকে দিচ্ছি
তাকে সুদৃড়ভাবে আঁকড়ে ধরো
এবং এতে যা আছে তা স্মরণ রেখো।
তাহলে আশা করা যায় যে,
তোমরা সচেতন মানুষ হতে পারবে।”৬৩

কিন্তু এরপর তোমরা নিজেদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে।
তবুও উপাস্যের অনুগ্রহ ও তাঁর করুণা
তোমাদের সঙ্গ ছাড়েনি
নয়তো তোমরা কবেই ধ্বংস হয়ে যেতে।৬৪

নিজেদের জাতির সেইসব লোকের ঘটনা তো
তোমাদের জানাই আছে
যারা শনিবারের বিধান ভেঙেছিল।
আমরা তাদের বলে দিলামঃ বানর হয়ে যাও
এবং এমনভাবে অবস্থান করো
যাতে তোমাদের সবদিক থেকে লাঞ্ছনা গঞ্জনা সইতে হয়।৬৫


এভাবে আমরা তাদের পরিণতিকে সমকালীন লোকদের
ও পরবর্তী বংশধরদের জন্য শিক্ষণীয়
এবং যারা সচেতন মানুষ তাদের জন্য 
মহান উপদেশে পরিণত করেছি।৬৬

এরপর স্মরণ করো সেই ঘটনার কথা
যখন মূসা তার জাতিকে বললো,
আল্লাহ‌ তোমাদের একটি গাভী যবেহ করা হুকুম দিচ্ছেন।
তারা বললো, তুমি কি আমাদের সাথে ঠাট্টা করছো?
মূসা বললো, নিরেট মূর্খদের মতো কথা বলা থেকে
আমি আল্লাহ‌ কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।৬৭

তারা বললো, আচ্ছা তাহলে তোমার প্রভূর কাছে আবেদন করো
তিনি যেন সেই গাভীর কিছু বিস্তারিত বিবরণ আমাদের জানিয়ে দেন।
মূসা জবাব দিল, আল্লাহ‌ বলছেন,
সেটি অবশ্যি এমন একটি গাভী হতে হবে
যে বৃদ্ধা নয়, একেবারে ছোট্ট বাছুরটিও নয়
বরং হবে মাঝারি বয়সের।
কাজেই যেমনটি হুকুম দেয়া হয় ঠিক তেমনটিই করো।৬৮

আবার তারা বলতে লাগলো,
তোমার রবের কাছে আরো জিজ্ঞেস করো,
তার রংটি কেমন?
মূসা জবাব দিল, তিনি বলছেন,
গাভীটি অবশ্যি হলুদ রংয়ের হতে হবে,
তার রং এতই উজ্জল হবে
যাতে তা দেখে মানুষের মন ভরে যাবে।৬৯

আবার তারা বললো,
তোমার প্রভূর কাছ থেকে এবার পরিষ্কার ভাবে জেনে নাও,
তিনি কেমন ধরনের গাভী চান?
গাভীটি নির্ধারণ করার ব্যাপারে আমরা সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছি।
আল্লাহ‌ চাইলে আমরা অবশ্যি এটি বের করে ফেলবো।৭০

মূসা জবাব দিল আল্লাহ‌ বলছেন,
সেটি এমন একটি গাভী যাকে কোন কাজে নিযুক্ত করা হয়না,
জমি চাষ বা ক্ষেতে পানি সেচ কোনটিই করে না,
সুস্থ-সবল ও নিখুঁত।
একথায় তারা বলে উঠলো,
হ্যাঁ,, এবার তুমি ঠিক সন্ধান দিয়েছো।
অতঃপর তারা তাকে যবেহ করলো,
অন্যথায় তারা এমনটি করতো বলে মনে হচ্ছিল না।৭১

আর স্মরণ করো সেই ঘটনার কথা
যখন তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে
এবং একজন আর একজনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিয়োগ আনছিলে।
আর আল্লাহ‌ সিদ্ধান্ত করেছিলেন
তোমরা যা কিছু গোপন করছো তা তিনি প্রকাশ করে দেবেন।৭২

সে সময় আমরা আদেশ দিলাম,
নিহতের লাশকে তার একটি অংশ দিয়ে আঘাত করো।
দেখো এভাবে আল্লাহ‌ মৃতদের জীবন দান করেন
এবং তোমাদেরকে নিজের নিশানী দেখান,
যাতে তোমরা (সত্য) অনুধাবন করতে পারো।৭৩

কিন্তু এ ধরনের নিশানী দেখার পরও
তোমাদের দিল কঠিন হয়ে গেছে,
পাথরের মত কঠিন বরং তার চেয়েও কঠিন।
কারণ এমন অনেক পাথর আছে
যার মধ্য দিয়ে ঝরণাধারা প্রবাহিত হয়
আবার অনেক পাথর ফেটে গেলে
তার মধ্য থেকে পানি বের হয়ে আসে,
আবার কোন কোন পাথর
আল্লাহর ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে পড়েও যায়।
আল্লাহ‌ তোমাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে বেখবর নন।৭৪

তোমরা কি তাদের থেকে আশা করো
তারা তোমাদের আহবানে বিশ্বাসী হবে? 
অথচ তাদের একটি দলের চিরাচরিত রীতি
এই চলে আসছে যে,
আল্লাহর কালাম শুনার পর
খুব ভালো করে জেনে বুঝে সজ্ঞানে
তার মধ্যে বিকৃতি সাধন করেছে।৭৫

 যারা বিশ্বাসী তাদের সাথে সাক্ষাত হলে তারা বলে,
আমরাও বিশ্বাস স্থাপন করেছি।
আবার যখন পরস্পরের সাথে নিরিবিলিতে কথা হয়
তখন বলে, তোমরা কি বুদ্ধিভ্রষ্ট হয়ে গেলে?
এদেরকে তোমরা এমন সব কথা বলে দিচ্ছো
যা আল্লাহ‌ তোমাদের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছেন,
ফলে এরা তোমাদের প্রভূর কাছে তোমাদের মোকাবিলায়
তোমাদের একথাকে প্রমাণ হিসেবে পেশ করবে?৭৬

এরা কি জানে না,
যা কিছু এরা গোপন করছে
এবং যা কিছু প্রকাশ করছে সমস্তই আল্লাহ‌ জানেন?৭৭

এদের মধ্যে দ্বিতীয় একটি দল হচ্ছে নিরক্ষরদের।
তাদের আল্লাহর কিতাবের জ্ঞান নেই,
নিজেদের ভিত্তিহীন আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো নিয়ে বসে আছে
এবং নিছক অনুমান ও ধারণার ওপর নির্ভর করে চলছে।৭৮

কাজেই তাদের জন্য ধ্বংস অবধারিত
যারা নিজেরা শরীয়াত রচনা করে
তারপর লোকদের বলে
এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে।
এভাবে তারা এর বিনিময়ে সামান্য স্বার্থ লাভ করে। 
তাদের এই রচনা তাদের ধ্বংসের কারণ
এবং তাদের এই উপার্জনও তাদের ধ্বংসের উপকরণ।৭৯

তারা বলে, আগুন আমাদের কখনো স্পর্শ করবে না,
তবে কয়েক দিনের শাস্তি হলেও হয়ে যেতে পারে।
এদেরকে জিজ্ঞেস করো,
তোমরা কি আল্লাহর কাছ থেকে কোন অঙ্গীকার নিয়েছো,
যার বিরুদ্ধাচারণ তিনি করতে পারেন না?
অথবা তোমরা আল্লাহর ওপর চাপিয়ে দিয়ে
এমন কথা বলছো
যে কথা তিনি নিজের ওপর চাপিয়ে নিয়েছেন বলে
তোমাদের জানা নেই?
আচ্ছা জাহান্নামের আগুন তোমাদেরকে স্পর্শ করবে না কেন?৮০
যে ব্যক্তিই পাপ করবে
এবং পাপের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়বে
সে-ই হবে নরকের বাসিন্দা এবং সেখানে থাকবে চিরকাল।৮১

আর যারা (এই গ্রন্থ) মেনে চলবে
এবং সৎকাজ করবে
তারাই হবে জান্নাতের অধিবাসী,
সেখানে থাকবে তারা চিরকাল।৮২

স্মরণ করো যখন ইসরাঈল সন্তানদের থেকে
আমরা এই মর্মে পাকাপোক্ত অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে,
আল্লাহ‌ ছাড়া আর কারোর দাসত্ব করবে না,
মা-বাপ, আত্মীয়-পরিজন, ইয়াতিম ও মিসকিনদের সাথে
ভালো ব্যবহার করবে,
লোকদেরকে ভালো কথা বলবে,
প্রার্থনা প্রতিষ্ঠা করবে
ও পরিশুদ্ধির জন্য দান করবে।
কিন্তু সামান্য কয়েকজন ছাড়া
তোমরা সবাই অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছিলে
এবং এখনো ভেঙে চলছো।৮৩

আবার স্মরণ করো,
যখন আমরা তোমাদের থেকে
মজবুত অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এই মর্মে যে,
তোমরা পরস্পর রক্তপাত করবে না
এবং একে অন্যকে গৃহ থেকে উচ্ছেদ করবে না।
তোমরা এর অঙ্গীকার করেছিলে, তোমরা নিজেরাই এর সাক্ষী।৮৪

কিন্তু আজ সেই তোমরাই
নিজেদের ভাই-বেরাদারদেরকে হত্যা করছো,
নিজেদের গোত্রীয় সম্পর্কযুক্ত কিছু লোককে
বাস্তভিটা ছাড়া করছো,
যুলুম ও অত্যধিক বাড়াবাড়ি সহকারে
তাদের বিরুদ্ধে দল গঠন করছো
এবং তারা যুদ্ধবন্দী হয়ে তোমাদের কাছে এলে
তাদের মুক্তির জন্য তোমরা মুক্তিপণ আদায় করছো।
অথচ তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে উচ্ছেদ করাই
তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল।
তাহলে কি তোমরা
আল্লাহর কিতাবের একটি অংশকে মানছ
এবং অন্য অংশকে অস্বীকার করছো? 
তারপর তোমাদের মধ্য থেকে যারাই এমনটি করবে
তাদের শাস্তি এ ছাড়া আর কি হতে পারে যে,
দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছিত ও পর্যুদস্ত হবে
এবং পরকালে তাদেরকে
কঠিনতম শাস্তির দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে?
তোমাদের কর্মকান্ড থেকে আল্লাহ‌ বেখবর নন।৮৫

এই লোকেরাই পরকালের বিনিময়ে
দুনিয়ার জীবন কিনে নিয়েছে।
কাজেই তাদের শাস্তি কমানো হবে না
এবং তারা কোন সাহায্যও পাবে না।৮৬

আমরা মূসাকে গ্রন্থ দিয়েছি।
তারপর ক্রমাগতভাবে বার্তাবাহক পাঠিয়েছি।
অবশেষে ঈসা ইবনে মারয়ামকে পাঠিয়েছি
উজ্জ্বল নিশানী দিয়ে
এবং পবিত্র রূহের মাধ্যমে তাকে সাহায্য করেছি। 
এরপর তোমরা এ কেমনতর আচরণ করে চলছো,
যখনই কোন বার্তাবাহক
তোমাদের প্রবৃত্তির কামনা বিরোধী
কোন জিনিস নিয়ে তোমাদের কাছে এসেছে
তখনই তোমরা তার বিরুদ্ধাচরণ করেছো,
কাউকে মিথ্যা বলেছো এবং কাউকে হত্যা করেছো।৮৭

তারা বলে, আমাদের হৃদয় সুরক্ষিত।
না, আসলে তাদের অস্বীকৃতির কারণে
তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হয়েছে,
তাই তারা খুব কমই বিশ্বাস স্থাপন করে থাকে।৮৮

আর এখন আল্লাহর পক্ষ থেকে
তাদের কাছে যে একটি গ্রন্থ এসেছে
তার সাথে তারা কেমন ব্যবহার করছে?
তাদের কাছে আগে থেকেই যে গ্রন্থটি ছিল
যদিও এটি তার সত্যতা স্বীকার করতো
এবং যদিও এর আগমনের পূর্বে
তারা নিজেরাই অবিশ্বাসীদের মোকাবিলায়
বিজয় ও সাহায্যের দোয়া চাইতো,
তবুও যখন সেই জিনিসটি এসে গেছে
এবং তাকে তারা চিনতেও পেরেছে
তখন তাকে মেনে নিতে তারা অস্বীকার করেছে। 
এই অস্বীকারকারীদের ওপর আল্লাহর অভিশম্পাত ।৮৯

যে জিনিসের সাহায্যে তারা মনের সান্ত্বনা লাভ করে,
তা কতই না নিকৃষ্ট! 
সেটি হচ্ছে, আল্লাহ‌ যে পথনির্দেশনা অবতীর্ন করেছেন
তারা কেবল এই জিদের বশবর্তী হয়ে
তাকে মেনে নিতে অস্বীকার করছে যে,
আল্লাহ‌ তাঁর যে দাসকে চেয়েছেন
নিজের অনুগ্রহ (অহী ও রিসালাত) দান করেছেন। 
কাজেই এখন তারা উপর্যুপরি অভিশপ্ত হয়েছে।
আর এই ধরনের অস্বীকারকারীদের জন্য
চরম লাঞ্ছনার শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে।৯০

যখন তাদেরকে বলা হয়,
আল্লাহ‌ যা অবতীর্ন করেছেন তার প্রতি বিশ্বাসী হও,
তারা বলে, “আমরা কেবল আমাদের এখানে (অর্থাৎ তাওরাত)
যা কিছু অবতীর্ন হয়েছে তার প্রতি বিশ্বাসী।”
এর বাইরে যা কিছু এসেছে
তার প্রতি বিশ্বাসী হতে তারা অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।
অথচ তা সত্য
এবং তাদের কাছে পূর্ব থেকে যে শিক্ষা ছিল
তার সত্যতার স্বীকৃতিও দিচ্ছে।
তাদেরকে বলে দাওঃ
যদি তোমরা তোমাদের ওখানে যে শিক্ষা অবতীর্ন হয়েছিল
তার প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকো,
তাহলে ইতিপূর্বে আল্লাহর বার্তাপ্রচারকদেরকে হত্যা করেছিলে কেন?৯১

তোমাদের কাছে মূসা এসেছিল
কেমন সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে।
তারপরও তোমরা এমনি যালেম হয়ে গিয়েছিলে যে,
সে একটু আড়াল হতেই তোমরা বাছুরকে উপাস্য বানিয়ে বসেছিলে।৯২

তারপর সেই অঙ্গীকারের কথাটাও একবার স্মরণ করো,
যা আমি তোমাদের থেকে নিয়েছিলাম
তূর পাহাড়কে তোমাদের ওপর তুলে ধরে।
আমি জোর দিয়েছিলাম,
যে পথনির্দেশ আমি তোমাদেরকে দিচ্ছি,
দৃঢ়ভাবে তা মেনে চলো
এবং মন দিয়ে শুনো।
তোমাদের পূর্বসূরীরা বলেছিল, আমরা শুনেছি কিন্তু মানবো না।
তাদের বাতিল প্রিয়তা ও অন্যায় প্রবণতার কারণে
তাদের হৃদয় প্রদেশে বাছুরই অবস্থান গেড়ে বসেছে।
যদি তোমরা বিশ্বাসী হয়ে থাকো,
তাহলে এ কেমন বিশ্বাস,
যা তোমাদেরকে এহেন খারাপ কাজের নির্দেশ দেয়?৯৩

তাদেরকে বলো,
যদি সত্যি সত্যিই আল্লাহ‌ সমগ্র মানবতাকে বাদ দিয়ে
একমাত্র তোমাদের জন্য আখেরাতের ঘর নির্দিষ্ট করে থাকেন,
তাহলে তো তোমাদের মৃত্যু কামনা করা উচিত 
যদি তোমাদের এই ধারণায় তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো।৯৪

নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো,
তারা কখনো এটা কামনা করবে না।
কারণ তারা স্বহস্তে যা কিছু উপার্জন করে সেখানে পাঠিয়েছে
তার স্বাভাবিক দাবী এটিই
(অর্থাৎ তারা সেখানে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করবে না) ।
আল্লাহ‌ ঐ সব যালেমদের অবস্থা ভালোভাবেই জানেন।৯৫

বেঁচে থাকার ব্যাপারে তোমরা তাদেরকে পাবে
মানুষের মধ্যে সবচেয়ে লোভী।
এমনকি এ ব্যাপারে তারা মুশরিকদের চাইতেও এগিয়ে রয়েছে।
এদের প্রত্যেকে চায়
কোনক্রমে সে যেন হাজার বছর বাঁচতে পারে।
অথচ দীর্ঘ জীবন কোন অবস্থায়ই তাকে
শাস্তি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবে না।

যে ধরনের কাজ এরা করছে আল্লাহ‌ তার সবই দেখছেন।৯৬

No comments:

Post a Comment