Wednesday, November 26, 2014

২০৮. কোরয়ান নিয়ে চিন্তা-গবেষনা করা

এটি একটি অত্যন্ত বরকতপূর্ণ কিতাব,৩১ যা (হে মুহাম্মাদ!) আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে এরা তার আয়াত সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে এবং জ্ঞানী ও চিন্তাশীলরা তা থেকে শিক্ষা নেয়। (সূরা সাদঃ ২৯)

তারা কি কুরআন সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে না? যদি এটি আল্লাহ‌ ছাড়া আর কারো পক্ষ থেকে হতো, তাহলে তারা এর মধ্যে বহু বর্ণনাগত অসঙ্গতি খুঁজে পেতো। (সূরা নিসাঃ ৮২)

হে মুহাম্মাদ! তাদেরকে বলো, “আমি তোমাদের একথা বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধনভাণ্ডার আছে, আমি গায়েবের জ্ঞানও রাখি না এবং তোমাদের একথাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো কেবলমাত্র সে অহীর অনুসরণ করি, যা আমার প্রতি নাযিল করা হয়।”৩১ তারপর তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে?৩২ তোমরা কি চিন্তা-ভাবনা করো না?
(সূরা আন'আমঃ ৫০)

Sunday, November 9, 2014

২০৭. সুদ or Usary or Riba

﴿ وَمَاۤ اٰتَيۡتُمۡ مِّنۡ رِّبًا لِّيَرۡبُوَا فِىۡۤ اَمۡوَالِ النَّاسِ فَلَا يَرۡبُوۡا عِنۡدَ اللّٰهِ‌ۚ وَمَاۤ اٰتَيۡتُمۡ مِّنۡ زَكٰوةٍ تُرِيۡدُوۡنَ وَجۡهَ اللّٰهِ فَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الۡمُضۡعِفُوۡنَ﴾


যে সুদ তোমরা দিয়ে থাকো, 
যাতে মানুষের সম্পদের সাথে মিশে তা বেড়ে যায়, 
আল্লাহর কাছে তা বাড়ে না। 
আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে 
পরিশুদ্ধির জন্য তোমরা যা দিয়ে থাকো, 
প্রকৃতপক্ষে তা ই বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। 
(সূর রূমঃ ৩৯)

﴿ يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡكُلُوۡا الرِّبٰٓوا اَضۡعَافًا مُّضٰعَفَةً‌ وَاتَّقُوۡا اللّٰهَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ‌ۚ‏﴾


হে বিশ্বাসীগণ! 
চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না 
এবং আল্লাহ সচেতন হও, 
আশা করি তোমরা সফলকাম হবে। 
(সূরা আলে ইমরানঃ ১৩০)
الَّذِيۡنَ يَاۡكُلُوۡنَ الرِّبٰوا لَا يَقُوۡمُوۡنَ اِلَّا كَمَا يَقُوۡمُ الَّذِىۡ يَتَخَبَّطُهُ الشَّيۡطٰنُ مِنَ الۡمَسِّ‌ؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمۡ قَالُوۡۤا اِنَّمَا الۡبَيۡعُ مِثۡلُ الرِّبٰوا‌ۘ‌ وَاَحَلَّ اللّٰهُ الۡبَيۡعَ وَحَرَّمَ الرِّبٰوا‌ؕ فَمَنۡ جَآءَهٗ مَوۡعِظَةٌ مِّنۡ رَّبِّهٖ فَانۡتَهٰى فَلَهٗ مَا سَلَفَ وَاَمۡرُهٗۤ اِلَى اللّٰهِ‌ؕ وَمَنۡ عَادَ فَاُولٰٓٮِٕكَ اَصۡحٰبُ النَّارِ‌ۚ هُمۡ فِيۡهَا خٰلِدُوۡنَ‏
যারা সুদ খায় তাদের অবস্থা হয়
ঠিক সেই লোকটির মতো
যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল করে দিয়েছে।
তাদের এই অবস্থায় উপনীত হবার কারণ হচ্ছে এই যে,
তারা বলেঃ “বিক্রয় তো সুদেরই মতো।”
অথচ আল্লাহ‌ বিক্রয়কে বৈধ করেছেন
এবং সুদকে করেছেন নিষিদ্ধ।
কাজেই যে ব্যক্তির কাছে তার প্রভূর পক্ষ থেকে
এই উপদেশ পৌঁছে যায়
এবং ভবিষ্যতে সুদখোরী থেকে সে বিরত হয়,
সে ক্ষেত্রে যা কিছু সে খেয়েছে তাতো খেয়ে ফেলেছেই
এবং এ ব্যাপারটি আল্লাহর কাছে সোপর্দ হয়ে গেছে।
আর এই নির্দেশের পরও যে ব্যক্তি আবার এই কাজ করে,
সে নরকের অধিবাসী। সেখানে সে থাকবে চিরকাল।
{আল বাকারাহঃ ২৭৫ } 

يَمۡحَقُ اللّٰهُ الرِّبٰوا وَيُرۡبِىۡ الصَّدَقٰتِ‌ؕ وَاللّٰهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ اَثِيۡمٍ‏
আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন
এবং দানকে বর্ধিত ও বিকশিত করেন।
আর আল্লাহ‌ অকৃতজ্ঞ দুষ্কৃতকারীকে পছন্দ করেন না।
{আল বাকারাহঃ ২৭৬ }

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا اتَّقُوۡا اللّٰهَ وَذَرُوۡا مَا بَقِىَ مِنَ الرِّبٰٓوا اِنۡ كُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِيۡنَ‏
হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ সচেতন হও
এবং লোকদের কাছে তোমাদের
যে সুদ বাকি রয়ে গেছে তা ছেড়ে দাও,
যদি যথার্থই তোমরা বিশ্বাসী হয়ে থাকো।
{আল বাকারাহঃ ২৭৮ }

فَاِنۡ لَّمۡ تَفۡعَلُوۡا فَاۡذَنُوۡا بِحَرۡبٍ مِّنَ اللّٰهِ وَرَسُوۡلِهٖ‌ۚ وَاِنۡ تُبۡتُمۡ فَلَكُمۡ رُءُوۡسُ اَمۡوَالِكُمۡ‌ۚ لَا تَظۡلِمُوۡنَ وَلَا تُظۡلَمُوۡنَ
কিন্তু যদি তোমরা এমনটি না করো
তাহলে জেনে রাখো,
এটা আল্লাহ‌ ও তাঁর বার্তাবাহকের পক্ষ থেকে
তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা।
এখনো সময় আছে (সুদ থেকে) ফিরে এসো
তাহলে তোমরা আসল মূলধনের অধিকারী হবে।
তোমরা জুলুম করবে না
এবং তোমাদের ওপর জুলুম করাও হবে না।
{আল বাকারাহঃ ২৭৯ }

Saturday, November 8, 2014

২০৬. বিজ্ঞানের গুরুত্ব সম্বন্ধে আল কোরয়ান

 “পড়, তোমার প্রভূর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন।
যিনি আলাক থেকে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন।“
(আলাক/৯৬.১,২)

যারা চিন্তাশীল ও বুদ্ধি বিবেক খাটিয়ে কাজ করে, আকাশ পৃথিবীর গঠনাকৃতি নিয়ে চিন্তা- ভাবনা করে তাদেরকে নিম্নোক্ত আয়াতে উতসাহিত করা হয়েছে।

“পৃথিবী আকাশের সৃষ্টি
এবং রাত দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে
চিন্তাশীল-বুদ্ধিমান-বিজ্ঞানী-গবেষকদের জন্য 
যারা উঠতে, বসতে শয়নে
সব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে
এবং আকাশ পৃথিবীর গঠনাকৃতি নিয়ে চিন্তা- গবেষনা করে

(তারা আপনা আপনি বলে ওঠেঃ)
হে আমাদের প্রভু!
এসব তুমি অনর্থক উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে সৃষ্টি করো নি
বাজে নিরর্থক কাজ করা থেকে তুমি পাক-পবিত্র মুক্ত

কাজেই হে প্রভু!
নরকের শাস্তি থেকে আমাদের রক্ষা করো
তুমি যাকে নরকে ফেলে দিয়েছো,
তাকে আসলে বড়ই লাঞ্ছনা অপমানের মধ্যে ঠেলে দিয়েছো
এবং এহেন জালেমদের কোন সাহায্যকারী হবে না

হে আমাদের প্রভূ!
 তোমার বার্তাবাহকদের মাধ্যমে তুমি যেসব অংগীকার করেছো
আমাদের সাথে, সেগুলো পূর্ণ করো
এবং কিয়ামতের দিন আমাদের লাঞ্ছনার গর্তে ফেলে দিয়ো না
নিঃসন্দেহে তুমি অংগীকার ভংগকারী নও

জবাবে তাদের প্রভূ বললেনঃ
আমি তোমাদের কারো কর্মকাণ্ড নষ্ট করবো না
পুরুষ হও বা নারী, তোমরা সবাই একই জাতির অন্তর্ভুক্ত 
কাজেই যারা আমার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছে
এবং আমার পথে যাদেরকে
নিজেদের ঘর বাড়ি থেকে বের করে দেয়া কষ্ট দেয়া হয়েছে
এবং যারা আমার জন্য লড়েছে মারা গেছে,
তাদের সমস্ত অপরাধ আমি ক্ষমা করে দেবো
এবং তাদেরকে এমন সব বাগানে প্রবেশ করাবো
যার নীচে দিয়ে ঝরণাধারা বয়ে চলবে
এসব হচ্ছে আল্লাহর কাছে তাদের প্রতিদান
এবং সবচেয়ে ভালো প্রতিদান আল্লাহর কাছেই আছে

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের লোকেরা-
যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি অকৃতজ্ঞ
তাদের কর্মকান্ড যেন তোমার অন্তরকে ধোকায় ফেলে না দেয়।

ওদের এইসব আনন্দ ফূর্তি সামান্য কয়েক দিনের
তারপর তাদের স্থান হবে নরকে, যা অতি নিকৃষ্ট।

বিপরীত পক্ষে যারা আল্লাহ সচেতন 
তাদের জন্য এমন সব বাগান রয়েছে, 
যার বুক চিরে বয়ে চলে অসংখ্য ঝর্নাধারা। 
সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। 
এ হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের জন্য মেহমানদারী। 
আর যা কিছু আল্লাহর কাছে আছে, 
সৎ কর্মশীলদের জন্য তাই ভালো।
গ্রন্থপ্রাপ্তদের মধ্যেও এমন কিছু লোক আছে, 
যারা আল্লাহকে মানে 
তোমাদের কাছে যে গ্রন্থ পাঠানো হয়েছে 
তার প্রতি বিশ্বাস রাখে 
এবং এর আগে তাদের নিজেদের কাছে 
যে গ্রন্থ পাঠানো হয়েছিল 
তার প্রতি বিশ্বাস রাখে, 
যারা আল্লাহর সামনে বিনত মস্তক 
এবং আল্লাহর নিদর্শনসমূহের (বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিস্কার) বিনিময়ে
সামান্য স্বার্থ ক্রয় করে না। 
তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের প্রভূর কাছে। 
আর তিনি হিসেব চুকিয়ে দেবার ব্যাপারে দেরী করেন না।
হে বিশ্বাসীগণ! 
অবিচল, অধ্যবসায়ী, ধ্রুব ও আল্লাহ সচেতন হও। 
যাতে তোমরা সফল হতে পারো। ”
(সূরা আলে ইমরানঃ ১৯০-২০০)

ইব্রাহীমের ঈমান সুদৃড় করার জন্য মহান প্রভূ তাকে তার নিদর্শন দেখিয়েছেন।

“আর সেই ঘটনাটিও সামনে রাখো,
যখন ইব্রাহীম বলেছিলঃ
আমার প্রভু! আমাকে দেখিয়ে দাও
কিভাবে তুমি মৃতদের পুনর্জীবিত করো
বললেনঃ তুমি কি বিশ্বাস করো না?
ইব্রাহীম জবাব দিলঃ বিশ্বাস তো করি,
তবে মানসিক নিশ্চিন্ততা লাভ করতে চাই
বললেনঃ ঠিক আছে, তুমি চারটি পাখি নাও
এবং তাদেরকে নিজের পোষ মানিয়ে নাও
তারপর তাদের এক একটি অংশ
এক একটি পাহাড়ের ওপর রাখো
এরপর তাদেরকে ডাকো
তারা তোমার কাছে দৌড়ে চলে আসবে
ভালোভাবে জেনে রাখো,
আল্লাহপ্রবল পরাক্রমশালী জ্ঞানময়
(সূরা বাকারাঃ ২৬০)

“ইবরাহীমকে এভাবেই আমি
পৃথিবী মহাকাশের পরিচালন ব্যবস্থা দেখাতাম 
আর জন্য দেখাতাম যে,
এভাবে সে দৃঢ় বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে
(সূরা আন’আমঃ ৭৫)
আমাদের নবী (দঃ) কে ও মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁর সৃষ্টি পরিচালনার নিদর্শন দেখিয়েছিলেন।
পবিত্র তিনি যিনি নিয়ে গেছেন এক রাতে
নিজের বান্দাকে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আক্সা পর্যন্ত,
যার পরিবেশকে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন,
যাতে তাকে নিজের কিছু নিদর্শন দেখান 
আসলে তিনিই সবকিছুর শ্রোতা দ্রষ্টা
(সূরা বনী ইসরাঈলঃ ১)
যুদ্ধের জন্য উন্নত সাজোয়া যান এবং অন্যান্য শক্তি সংগ্রহের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন মহান প্রভূ।বিজ্ঞানের উতকর্ষ সাধন ছাড়া এটা সম্ভব নয়। মহান প্রভূর আদেশ,
আর তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী
সর্বাধিক পরিমাণ শক্তি সদাপ্রস্তুত ঘোড়া
তাদের মোকাবিলার জন্য যোগাড় করে রাখো 
এর মাধ্যমে তোমরা ভীতসন্ত্রস্ত করবে আল্লাহর শত্রুকে,
নিজের শত্রুকে এবং অন্য এমন সব শত্রুকে
যাদেরকে তোমরা চিনো না
কিন্তু আল্লাহচেনেন
আল্লাহর পথে তোমরা যা কিছু খরচ করবে,
তার পূর্ণ প্রতিদান তোমাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হবে
এবং তোমাদের প্রতি কখনো জুলুম করা হবে না
(সূরা আনফালঃ ৬০)