পৃথিবীতে একমাত্র নির্ভূল হেদায়াত বা
পথনির্দেশ হচ্ছে ‘আল কোরআন’। সূরা বাকারার ২ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, “এটিই সেই
কিতাব যাতে কোনরূপ সন্দেহের অবকাশ নেই, যা আল্লাহভীরুদের জন্য একমাত্র হেদায়াত বা
পথনির্দেশ”। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নিজেই এই কিতার সংরক্ষনের দায়িত্ব নিয়েছেন। সূরা
হিজরের ৯ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, “আর এই বাণী,
একে তো আমিই অবতীর্ণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক”। এই কিতাব ছাড়া পৃথিবীর যেকোনো গ্রন্থ, মানুষ (নবীগন ব্যতীত), দল, মতবাদ,
আলেম-ওলামা-পীর-মাশায়েখ-হুজুর-ধর্মীয় নেতা যে তত্ত্বই দেন না কেন তাতে ভূলের অবকাশ
রয়েছে। তাতে শয়তানের অনুপ্রবেশের সুযোগ রয়েছে। এমনকি তা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে
অনেক অনেক দূরে সরিয়ে শিরকে লিপ্ত করিয়ে দিতে পারে। তাই আসুন একমাত্র এই মহাগ্রন্থ
‘আল কোরআন’কে জানি, বুঝি, অনুসরন করি এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী তা মানুষের মাঝে
ছড়িয়ে দেই। অনন্তকালীন জান্নাতে যাওয়ার এটিই একমাত্র সহজ রাস্তা বা সীরাতুল
মুস্তাকীম। সূরা আল-আন’আমের ১২৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, “অথচ
এ পথটিই তোমাদের রবের সোজা পথ বা সীরাতুল
মুস্তাকীম। আর তার নিদর্শনগুলো তাদের জন্য সুস্পষ্ট করে
দেয়া হয়েছে যারা উপদেশ গ্রহণ করে”। তাই নিশ্চিন্তে জান্নাতের পথিক হতে চাইলে কোরআনকে শক্ত
করে আঁকড়ে ধরুন। আল্লাহ বলেন, "তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে (আল কোরআন) শক্তভাবে ধারন
করো"। আর এই কোরআন নিয়েই সর্বোত্তম চেষ্টা প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আল্লাহ বলেন, “
তোমরা কোরআন নিয়ে সর্বোত্তম প্রচেষ্টা চালাও”।
Thursday, January 30, 2014
৮০. মানবজাতির অধিকাংশ লোকই ফাসেক
আমি যখনই কোন জনপদে নবী পাঠিয়েছি, সেখানকার লোকদেরকে প্রথমে অর্থকষ্ট ও
দুঃখ-দুর্দশার সম্মুখীন করেছি, একথা ভেবে যে, হয়তো তারা বিনম্র হবে ও নতি
স্বীকার করবে। তারপর তাদের দুরবস্থাকে সমৃদ্ধিতে ভরে দিয়েছি। ফলে তারা প্রাচুর্যে
পরিপূর্ণ হয়ে গেছে এবং বলতে শুরু করেছে “আমাদের পূর্বপুরুষদের ওপরও দুর্দিন
ও সুদিনের আনাগোনা চলতো।” অবশেষে আমি তাদেরকে সহসাই পাকড়াও করেছি। অথচ
তারা জানতেও পারেনি।
যদি জনপদের লোকেরা ঈমান আনতো এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করতো, তাহলে আমি
তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর রবকতসমূহের দুয়ার খুলে দিতাম। কিন্তু তারা তো
প্রত্যাখ্যান করেছে। কাজেই তারা যে অসৎকাজ করে যাচ্ছিলো তার জন্য আমি
তাদেরকে পাকড়াও করেছি।
জনপদের লোকেরা কি এখন এ ব্যাপারে নির্ভয় হয়ে গেছে যে, আমার শাস্তি কখনো
অকস্মাত রাত্রিকালে তাদের ওপর এসে পড়বে না, যখন তারা থাকবে নিদ্রামগ্ন?
অথবা তারা নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে যে, আমাদের মজবুত হাত কখনো দিনের বেলা তাদের ওপর এসে পড়বে না, যখন তারা খেলাধুলায় মেতে থাকবে? এরা কি আল্লাহর কৌশলের ব্যাপারে নির্ভীক হয়ে গেছে? অথচ যে সব সম্প্রদায়ের ধ্বংস অবধারিত তারা ছাড়া আল্লাহর কৌশলের ব্যাপারে আর কেউ নির্ভীক হয় না।
পৃথিবীর পূর্ববর্তী অধিবাসীদের পর যারা তার উত্তরাধিকারী হয়, তারা কি এ
বাস্তবতা থেকে ততটুকুও শেখেনি যে, আমি চাইলে তাদের অপরাধের দরুন তাদেরকে
পাকড়াও করতে পারি।
(কিন্তু তারা শিক্ষণীয় বিষয়াবলীর ব্যাপারে অবজ্ঞা ও অবহেলা প্রদর্শন করে
থাকে। ) আর আমি তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেই। ফলে তারা কিছুই শোনে না।
যেসব জাতির কাহিনী আমি তোমাদের শুনাচ্ছি (যাদের দৃষ্টান্ত তোমাদের সামনে
রয়েছে) তাদের রসূলগণ সুস্পষ্ট প্রমাণসহ তাদের কাছে আসে, কিন্তু যে জিনিসকে
তারা একবার মিথ্যা বলেছিল তাকে আবার মেনে নেবার পাত্র তারা ছিল না। দেখো,
এভাবে আমি সত্য অস্বীকারকারীদের দিলে মোহর মেরে দেই।
তাদের অধিকাংশের মধ্যে আমি অঙ্গীকার পালনের মনোভাব পাইনি। বরং অধিকাংশকেই পেয়েছি ফাসেক ও নাফরমান। ৭/৯৪-১০২