Thursday, January 23, 2014

৮৬. ইসলামের নামে পৃথক দল বানানো বা দলাদলি করা

ইসলাম কোনো দল, গোষ্ঠি, পীর-ফকির বা কোনো মতবাদের নয়। সত্যিকারের ইসলাম হলো এক আল্লাহ ও এক কিতাবের অনুসারী হওয়া। রাসূলের (দঃ) রিসালাত তথা আল কোরানের আনুগত্য করা। দলাদলি ইসলামে হারাম। রাসূলের (দঃ) আগেও ইসলাম ছিল। রাসূল (দঃ) যখন রিসালাত নিয়ে এলেন তখন নতুন নামে দল গঠন করেননি। ইসলামের অনুসারী হিসেবেই রিসালাতের দায়িত্ব পালন করেছেন। আল্লাহ বলেন, তোমরা সবাই মিলে আল্লাহ‌র রুজ্জু (কোরআন) মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো এবং দলাদলি করো না। আল্লাহ‌ তোমাদের প্রতি যে অনুগ্রহ করেছেন সে কথা স্মরণ রেখো। তোমরা ছিলে পরস্পরের শত্রু। তিনি তোমাদের হৃদয়গুলো জুড়ে দিয়েছেন। ফলে তাঁর অনুগ্রহ ও মেহেরবানীতে তোমরা ভাই ভাই হয়ে গেছো। তোমরা একটি অগ্নিকুণ্ডের কিনারে দাঁড়িয়ে ছিলে। আল্লাহ‌ সেখান থেকে তোমাদের বাঁচিয়ে নিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ‌ তাঁর আয়াতসমূহ তোমাদের সামনে সুস্পষ্ট করে তুলেন। হয়তো এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে তোমরা নিজেদের কল্যাণের সোজা সরল পথ দেখতে পাবে। সূরা আলে ইমরান-১০৩।

৮৭. মানুষ কে?

কাউকে মানুষ বলা যাবে তখন যখন সে তার সৃষ্টিকর্তা প্রতিপালকের প্রকৃত গোলাম হবে। যে প্রকৃত গোলাম হবে না তাকে মানুষ বলা যায় না। আল্লাহ বলেন,
হে মানুষ! গোলামী বা দাসত্ব করো তোমাদের রবের, যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্বে যারা অতিক্রান্ত হয়েছে তাদের সবার সৃষ্টিকর্তা, এভাবেই তোমরা নিষ্কৃতি লাভের আশা করতে পারো।
সূরা বাকারা/২১

৮৮. না বুঝে কোরআন পড়া

এটি সেই গ্রন্থ যাতে কোনো সন্দেহ নেই, আর এটি আল্লাহভীরুদের জন্য একমাত্র পথপ্রদর্শক। সুরা বাকারা/২।

না বুঝে আরবীতে কোরআন পড়ে কোনো ফায়দা নেই। বরং এটা আল্লাহর সাথে চরম ধৃষ্টতা যে মানুষের কাছে তিনি যে মেসেজ দিয়েছেন তা সে বোঝার চেষ্টা করছে না। আল্লাহ বলেন,
তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেনি, নাকি তাদের মনের ওপর তালা লাগানো আছে? সূরা মুহাম্মদ/২৪

তাই যদি কেঁউ কোরআন পড়েই তবে তা বুঝেই পড়া উচিত। যে আরবী বুঝে না তার মাতৃভাষায় কোরআন শেখাই উত্তম। আল্লাহ বলেন,
আমি একে আরবী ভাষায় কুরআন বানিয়ে নাযিল করেছি, যাতে তোমরা (আরববাসীরা) একে ভালোভাবে বুঝতে পারো। সূরা ইউসূফ/২।
অর্থ্যাত আল্লাহও চান যে মানুষ মাতৃভাষায় কোরআন বুঝুক। মাতৃভাষা মানুষের মাঝে যেমন আবেগ সৃষ্টি করতে পারে অন্য ভাষা তা পারে না। আর কোরআন থেকে জানা যায় যে আল্লাহ যখন যে জাতির কাছে কিতাব নাজিল করেছেন তা তার মাতৃভাষায়ই করেছেন। যেমন ইহুদীদের কাছে কিতাব নাজিল করা হয়েছিল হিব্রু ভাষায়।

তবে ধীরে ধীরে আরবী ভাষাটাও শিখে নেয়া উচিত। এ ব্যাপারে একটা উদাহরন দেয়া যায় যে, যেসব শ্রমিক পেটার দায়ে সৌদি আরব যায় তারা কিন্তু শেখানে টাকা ইনকামের জন্য খুব ভালো করে আরবী শিখে ফেলে। কিন্তু আমরা অনন্তকালের জন্য জান্নাত পাবার জন্য আরবী শিখতে রাজি নই। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের উদ্দেশ্যে পাঠানো গ্রন্থটি আমরা না বুঝে সারা জীবন বিড়বিড় করি। আর এই চরম ধৃষ্টতার জন্য সর্বনিন্ম নরকে পৌছে যাব।

৮৯. দ্বীনের (জীবন পদ্ধতি) ব্যাপারে জোর জবরদস্তি

দ্বীনের ব্যাপারে কোনো জোর জবরদস্তি নাই... সূরা বাকারাহ-২৫৬। যদি তোমার রবের ইচ্ছা হতো তাহলে সারা দুনিয়াবাসী ঈমান আনতো। তবে কি তুমি মুমিন হবার জন্য লোকদের ওপর জবরদস্তি করবে? সূরা ইউনুস/৯৯।