Tuesday, October 21, 2014

১৯৩. সূরা বনী ইসরাঈল

১৭. সূরা বনী ইসরাঈল
পবিত্র তিনি
যিনি নিয়ে গেছেন এক রাতে
নিজের দাসকে
মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আক্‌সা পর্যন্ত,
যার পরিবেশকে তিনি সমৃদ্ধ করেছেন,
যাতে তাকে নিজের কিছু নিদর্শন দেখান।
আসলে তিনিই সবকিছুর শ্রোতা ও দ্রষ্টা।১

আমি ইতিপূর্বে মূসাকে সূত্র দিয়েছিলাম
এবং একে ইসরাঈলের বংশধরদের জন্য পথনির্দেশনার মাধ্যম করেছিলাম
এ তাগিদ সহকারে যে,
আমাকে ছাড়া আর কাউকে নিজের অভিভাবক করো না।২

তোমরা তাদের বংশধর
যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় উঠিয়েছিলাম
এবং নূহ আমার একজন কৃতজ্ঞ দাস ছিল।৩

তারপর আমি নিজ সূত্রসমূহে
ইসরাঈলের বংশধরদেরকে এ মর্মে সতর্ক করে দিয়েছিলাম যে,
তোমরা দুবার পৃথিবীতে বিরাট বিপর্যয় সৃষ্টি করবে
এবং ভীষণ বিদ্রোহাত্মক আচরণ করবে।৪

শেষ পর্যন্ত যখন এদের মধ্য থেকে প্রথম বিদ্রোহের সময়টি এলো
তখন হে ইসরাঈলের বশধরেরা!
আমি তোমাদের মুকাবিলায় নিজের এমন একদল ক্রীতদাসের আবির্ভাব ঘটালাম,
যারা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী
এবং তারা তোমাদের দেশে প্রবেশ করে সবদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
এটি একটি প্রতিশ্রুতি ছিল, যা পূর্ণ হওয়াই ছিল অবধারিত।৫

এরপর আমি তোমাদেরকে তাদের ওপর বিজয় লাভের সুযোগ করে দিয়েছি
এবং তোমাদেরকে সাহায্য করেছি অর্থ ও সন্তানের সাহায্যে
আর তোমাদের সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়িয়ে দিয়েছি।৬
  
দেখো, তোমরা ভাল কাজ করে থাকলে
তা তোমাদের নিজেদের জন্যই ভাল ছিল
আর খারাপ কাজ করে থাকলে
তোমাদের নিজেদেরই জন্য তা খারাপ প্রমাণিত হবে।
তারপর যখন পরবর্তী প্রতিশ্রুতির সময় এসেছে
তখন আমি অন্য শত্রুদেরকে তোমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছি,
যাতে তারা তোমাদের চেহারা বিকৃত করে দেয়
এবং মসজিদে এমনভাবে ঢুকে পড়ে
যেমন প্রথমবার শত্রুরা ঢুকে পড়েছিল
আর যে জিনিসের ওপরই তাদের হাত পড়ে
তাকে ধ্বংস করে রেখে দেয়।৭

 এখন তোমাদের প্রভূ তোমাদের প্রতি করুণা করতে পারেন।
কিন্তু যদি তোমরা আবার নিজেদের আগের আচরণের পুনরাবৃত্তি করো
তাহলে আমিও আবার আমার শাস্তির পুনরাবৃত্তি করবো।
আর অনুগ্রহ অস্বীকারকারীদের জন্য আমি
নরকের জেলখানা বানিয়ে রেখেছি।৮

আসলে এ পাঠ্য এমন পথ দেখায়
যা একেবারেই সোজা।
যারা এর নির্দেশিত পন্থায় ভাল কাজ করতে থাকে
তাদেরকে সে সুখবর দেয় এ মর্মে যে,
তাদের জন্য রয়েছে মহা প্রতিদান।৯

তারপরও যারা নিশ্চিত শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে না 
তাদেরকে এ সংবাদ দেয় যে,
তাদের জন্য আমি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা করে রাখি। ১০
  
মানুষ অকল্যাণ কামনা করে সেভাবে
যেভাবে কল্যাণ কামনা করা উচিত।
মানুষ বড়ই দ্রুতকামী।১১

 দেখো, আমি রাত ও দিনকে দুটি নিদর্শন বানিয়েছি।
রাতের নিদর্শনকে বানিয়েছি আলোহীন
এবং দিনের নিদর্শনকে করেছি আলোকোজ্জ্বল,
যাতে তোমরা তোমাদের প্রভূর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পারো
এবং মাস ও বছরের হিসেব জানতে সক্ষম হও।
এভাবে আমি প্রত্যেকটি জিনিসকে আলাদাভাবে পৃথক করে রেখেছি।১২
  
প্রত্যেক মানুষের ভাল-মন্দ কাজের নিদর্শন
আমি তার গলায় ঝুলিয়ে রাখি
এবং সত্য প্রতিষ্ঠার সময় তার জন্য বের করি একটি লিখন,
যাকে সে খোলা গ্রন্থের আকারে পায়।১৩

 পড়ো, নিজের কর্মকান্ডের বিবিরনী!
আজ নিজের হিসেব করার জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ট।১৪
  
যে ব্যক্তি সত্য নির্দেশনার উপরে থাকে,
তা তার নিজের জন্যই কল্যাণকর হয়।
আর যে ব্যক্তি সত্যভ্রষ্ট হয়,
তার ধ্বংসকারিতা তার ওপরই বর্তায়। 
কোন বোঝা বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না। 
আর আমরা একজন সত্য প্রচারক না পাঠিয়ে দেয়া পর্যন্ত
কাউকে শাস্তি দেই না।১৫


আর যখন আমরা দেখতে পাই যে
প্রকৃতিতে দেয়া আমাদের সূত্র অনুযায়ী
কোন জাতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে,
তখন তার সমৃদ্ধিশালী লোকদেরকে সত্য নির্দেশ দিয়ে থাকি,
তারপরও তারা সেখানে অবাধ্যতা করতে থাকে
আর তখন সেই জনবসতির ওপর শাস্তি এসে যায়
এবং আমরা তাকে ধ্বংস করে দেই।১৬


দেখো, কত মানব গোষ্ঠী নূহের পরে আমাদের নিয়ম অনুযায়ী ধ্বংস হয়ে গেছে।
তোমার প্রভূ নিজের দাসদের অপরাধ সম্পর্কে পুরোপুরি জানেন
এবং তিনি সবকিছু দেখছেন।

যে কেউ আশু লাভের আকাঙ্ক্ষা করে,
তাকে আমি এখানেই যা কিছু দিতে চাই দিয়ে দেই
,
তারপর তার জন্য নরক নির্ধারন করে দেই,
যার উত্তাপ সে ভুগবে নিন্দিত ও ধিকৃত হয়ে।১৮

আর যে ব্যক্তি স্থায়ী কর্মফলের প্রত্যাশী হয়
এবং সেজন্য প্রচেষ্টা চালায়,
যেমন প্রচেষ্টা চালানো উচিত এবং সে হয় শান্তিবাদী,
এক্ষেত্রে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির প্রচেষ্টার
যথোচিত মর্যাদা দেয়া হবে।১৯

এদেরকেও এবং ওদেরকেও,
দুদলকেই আমি জীবন উপকরণ দিয়ে যাচ্ছি,
এ হচ্ছে তোমার প্রভূর দান
এবং তাঁর দান রুখে দেবার কেউ নেই।২০

কিন্তু দেখো, দুনিয়াতেই আমি একটি দলকে
অন্য একটির ওপর কেমন শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে রেখেছি।
তবে স্থায়ী কর্মফল প্রাপ্তির মাঝেই রয়েছে মহান মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব।২১

আল্লাহর সাথে দ্বিতীয় কাউকে উপাস্য মেনো না। 
অন্যথায় নিন্দিত ও অসহায়-বান্ধব হারা হয়ে পড়বে।২২

তোমার প্রভূ নির্দেশ দিয়েছেনঃ 
তোমরা কারো দাসত্ব করো না,
একমাত্র তাঁরই দাসত্ব করো। 
পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো।
যদি তোমাদের কাছে তাদের কোন একজন
বা উভয় বৃদ্ধ অবস্থায় থাকে,
তাহলে তাদেরকে উহ্পর্যন্তও বলো না
এবং তাদেরকে ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না
বরং তাদের সাথে মর্যাদা সহকারে কথা বলো।২৩

আর দয়া ও কোমলতা সহকারে
তাদের সামনে বিনম্র থাকো
এবং দোয়া করতে থাকো এই বলেঃ
হে আমার প্রতিপালক!
তাদের প্রতি দয়া করো,
যেমন তারা দয়া, মায়া, মমতা সহকারে
শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।২৪

তোমাদের রব খুব ভালো করেই জানেন
তোমাদের মনে কি আছে।
যদি তোমরা সৎকর্মশীল হয়ে জীবন যাপন করো,
তাহলে তিনি এমন লোকদের প্রতি ক্ষমাশীল
যারা নিজেদের ভুলের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে
দাসত্বের নীতি অবলম্বন করার দিকে ফিরে আসে।২৫

আত্মীয়কে তার অধিকার দাও
এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও তাদের অধিকার দাও।২৬

বাজে খরচ করো না।
যারা বাজে খরচ করে তারা শয়তানের ভাই
আর শয়তান তার রবের প্রতি অকৃতজ্ঞ।২৭

যদি তাদের থেকে
(অর্থাৎ অভাবী, আত্মীয়-স্বজন, মিসকীন ও মুসাফির)
তোমাকে মুখ ফিরিয়ে নিতে হয় এজন্য যে,
এখনো তুমি প্রত্যাশিত রহমতের সন্ধান করে ফিরছো,
তাহলে তাদেরকে নরম জবাব দাও। ২৮

 নিজের হাত গলায় বেঁধে রেখো না
এবং তাকে একেবারে খোলাও ছেড়ে দিয়ো না,
তাহলে তুমি নিন্দিত ও অক্ষম হয়ে যাবে।২৯

তোমার প্রভূ যার জন্য চান
জীবনোপকরন প্রশস্ত করে দেন
আবার যাকে চান পরিমিত দেন।
তিনি নিজের দাসদের অবস্থা জানেন এবং তাদেরকে দেখছেন।৩০

 দারিদ্রের আশঙ্কায় নিজেদের সন্তান হত্যা করো না।
আমি তাদেরকেও জীবনোপকরন দেবো এবং তোমাদেরকেও।
আসলে তাদেরকে হত্যা করা একটি মহাপাপ।৩১

ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না, ওটা অত্যন্ত অশ্লীল ও জঘন্য পথ।৩২

আল্লাহ‌ যাকে হত্যা করা নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন
সত্য ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করো না। 
আর যে ব্যক্তি অত্যাচারিত অবস্থায় নিহত হয়েছে
তার অভিভাবককে আমি কিসাস দাবী করার অধিকার দান করেছি। 
কাজেই হত্যার ব্যাপারে তার সীমা অতিক্রম করা উচিত নয়
তাকে সাহায্য করা হবে।৩৩

ইয়াতীমের সম্পত্তির ধারে কাছে যেয়ো না,
তবে হ্যাঁ সদুপায়ে,
যে পর্যন্ত না সে বয়োপ্রাপ্ত হয়ে যায়।

প্রতিশ্রুতি পালন করো,
অবশ্যই প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে তোমাদের জবাবদিহি করতে হবে।৩৪

মেপে দেবার সময় সঠিক পরিমাপে দাও
এবং ওজন করে দেবার সময় সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ওজন করো। 
এটিই ভাল পদ্ধতি এবং পরিণামের দিক দিয়েও এটিই উত্তম।৩৫

এমন কোন জিনিসের পেছনে লেগে যেয়ো না
যে সম্পর্কে তোমার জ্ঞান নেই।
নিশ্চিতভাবেই দৃষ্টি, শ্রুতি এবং মন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।৩৬

 যমীনে দম্ভভরে চলো না।
তুমি না যমীনকে চিরে ফেলতে পারবে,
না পাহাড়ের উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পারবে। ৩৭

এ বিষয়গুলোর মধ্য থেকে প্রত্যেকটির খারাপ দিক
তোমার প্রভূর কাছে অপছন্দনীয়।৩৮
  
তোমার প্রভূ তোমাকে অহীর মাধ্যমে
যে প্রজ্ঞাপূর্ণ কথাগুলো বলেছেন এগুলো তার অন্তর্ভুক্ত।
আর দেখো, আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য স্থির করে নিয়ো না,
অন্যথায় তোমাকে নরকে নিক্ষেপ করা হবে নিন্দিত
এবং সব রকমের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত অবস্থায়।৩৯


কেমন অদ্ভূত কথা!
তোমাদের রব তোমাদের পুত্র সন্তান দিয়ে অনুগৃহীত করেছেন
এবং নিজের জন্য ফেরেশতাদেরকে কন্যা সন্তান বানিয়ে নিয়েছেন
এটা ভয়ানক মিথ্যা কথা,
যা তোমরা নিজেদের মুখে উচ্চারণ করছো।৪০

আমি এ কুরআনে নানা ভাবে লোকদেরকে বুঝিয়েছি
যেন তারা সজাগ হয়,
কিন্তু তারা সত্য থেকে আরো বেশী দূরে সরে যাচ্ছে।৪১

এদেরকে বলো,
যদি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্য থাকতো যেমন এরা বলে,
তাহলে সে আরশের মালিকের জায়গায় পৌঁছে যাবার জন্য
নিশ্চয়ই চেষ্টা করতো।৪২

পাক-পবিত্র তিনি
এবং এরা যেসব কথা বলছে তিনি তার অনেক ঊর্ধ্বে।৪৩

 তাঁর পবিত্রতা তো বর্ণনা করছে
সাত আকাশ ও পৃথিবী
এবং তাদের মধ্যে যা কিছু আছে সব জিনিসই। 
এমন কোন জিনিস নেই
যা তাঁর প্রশংসা সহকারে তাঁর পবিত্রতা
ও মহিমা ঘোষণা করছে না
কিন্তু তোমরা তাদের পবিত্রতা ও মহিমা কীর্তন
বুঝতে পারো না।
আসলে তিনি বড়ই সহিষ্ণু ও ক্ষমাশীল।৪৪

যখন তুমি কুরআন পড়ো
তখন আমি তোমার ও যারা পরকালের প্রতি বিশ্বাসী নয়
তাদের মাঝখানে একটি পর্দা ঝুলিয়ে দেই।৪৫
 এবং তাদের মনের ওপর এমন আবরণ চড়িয়ে দেই
যেন তারা কিছুই বুঝে না
এবং তাদের কানে তালা লাগিয়ে দেই। 
আর যখন তুমি কুরআনে নিজের একমাত্র প্রভূর কথা পড়ো
তখন তারা ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেয়।৪৬

আমি জানি, যখন তারা কান লাগিয়ে তোমার কথা শোনে
তখন আসলে কি শোনে
এবং যখন বসে পরস্পর কানাকানি করে
তখন কি বলে।
এ জালেমরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে,
তোমরা এই যে লোকটির পেছনে চলছো
এতো একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তি।৪৭

দেখো, কী সব কথা এরা তোমার ওপর ছুঁড়ে দিচ্ছে,
এরা পথভ্রষ্ট হয়েছে, এরা পথ পায় না।৪৮
  
তারা বলে, “আমরা যখন শুধুমাত্র হাড় ও মাটি হয়ে যাবো
তখন কি আমাদের আবার নতুন করে পয়দা করে ওঠানো হবে?”৪৯
এদেরকে বলে দাও, “তোমরা পাথর বা লোহাই হয়ে যাও ৫০
অথবা তার চেয়েও বেশী কঠিন কোন জিনিস,
যার অবস্থান তোমাদের ধারণায় জীবনীশক্তি লাভ করার বহুদূরে
(তবুও তোমাদের ওঠানো হবেই)।
তারা নিশ্চয়ই জিজ্ঞেস করবে,
কে আমাদের আবার জীবনের দিকে ফিরিয়ে আনবে?”
জবাবে বলো, “তিনিই, যিনি প্রথমবার তোমাদের পয়দা করেন।
তারা মাথা নেড়ে নেড়ে জিজ্ঞেস করবে,
আচ্ছা, তাহলে এটা কবে হবে?”
তুমি বলে দাও, অবাক হবার কিছুই নেই,
সে সময়টা হয়তো নিকটেই এসে গেছে।৫১

যেদিন তিনি তোমাদের ডাকবেন,
তোমরা তাঁর প্রশংসাবাণী উচ্চারণ করতে করতে
তাঁর ডাকের জবাবে বের হয়ে আসবে
এবং তখন তোমাদের এ ধারণা হবে যে,
তোমরা অল্প কিছুক্ষণ মাত্র এ অবস্থায় কাটিয়েছ।৫২

আর আমার দাসদেরকে বলে দাও,
তারা যেন মুখে এমন কথা বলে যা সর্বোত্তম। 
আসলে শয়তান মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করে।
প্রকৃতপক্ষে শয়তান হচ্ছে মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।৫৩

তোমাদের প্রভূ তোমাদের অবস্থা সম্পর্কে বেশী জানেন।
তিনি চাইলে তোমাদের প্রতি দয়া করেন
এবং চাইলে তোমাদের শাস্তি দেন। 
আমি তোমাকে লোকদের ওপর হাবিলদার করে পাঠাইনি।৫৪

 তোমার প্রভূ পৃথিবী ও আকাশের সৃষ্টিসমূহকে বেশী জানেন।
আমি আমার বার্তা প্রচারকদের
একেক জনকে একেক রকম বিশেষত্ব দিয়ে পাঠিয়েছি 
এবং আমি দাউদকে যাবুর দিয়েছিলাম।৫৫

 এদেরকে বলো, ডাক দিয়ে দেখো তোমাদের সেই উপাস্যদেরকে,
যাদেরকে তোমরা আল্লাহ ছাড়া (নিজেদের কার্যোদ্ধারকারী) মনে করো,
তারা তোমাদের কোন কষ্ট দূর করতে পারবে না 
এবং তা পরিবর্তন করতেও পারবে না।৫৬

এরা যাদেরকে ডাকে
তারা তো নিজেরাই নিজেদের রবের ।
নৈকট্য লাভের উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছে যে,
কে তাঁর নিকটতর হয়ে যাবে
এবং এরা তাঁর করুণার প্রত্যাশী
এবং তাঁর শাস্তির ভয়ে ভীত। 
আসলে তোমার প্রভূর শাস্তি ভয় করার মতো।৫৭

আর এমন কোন জনপদ নেই,
যা আমি কিয়ামতের আগে ধ্বংস করে দেবো না 
অথবা যাকে কঠোর শাস্তি দেবো না,
আল্লাহর লিখনে এটা লেখা আছে।৫৮

আর এদের পূর্ববর্তী লোকেরা
নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করেছে বলেই তো
আমি নিদর্শন পাঠানো থেকে বিরত রয়েছি।
(যেমন দেখে নাও)
সামূদকে আমি প্রকাশ্যে উটনী এনে দিলাম
এবং তারা তার ওপর জুলুম করলো। 
আমি নিদর্শন তো এজন্য পাঠাই
যাতে লোকেরা তা দেখে ভয় পায়।৫৯


৬০.) স্মরণ করো হে মুহাম্মাদ! আমি তোমাকে বলে দিয়েছিলাম, তোমার রব এ লোকদেরকে ঘিরে রেখেছেন।৭০ আর এই যা কিছু এখনই আমি তোমাকে দেখিয়েছি৭১ একে এবং কুরআনে অভিশপ্ত গাছকে৭২ আমি এদের জন্য একটি ফিতনা বানিয়ে রেখে দিয়েছি।৭৩ আমি এদেরকে অনবরত সতর্ক করে যাচ্ছি কিন্তু প্রতিটি সতর্ক সংকেত এদের অবাধ্যতা বাড়িয়ে চলছে।


আর স্মরণ করো, যখন আমি ফেরেশতাদের বললাম,
আদমকে সিজদা করো,
তখন সবাই সিজদা করলো কিন্তু ইবলীস করলো না।
সে বললো, “আমি কি তাকে সিজদা করবো
যাকে তুমি বানিয়েছো মাটি দিয়ে?”৬১

তারপর সে বললো, “দেখোতো ভালো করে,
তুমি যে একে আমার ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছো,
এ কি এর যোগ্য ছিল?
যদি তুমি আমাকে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত অবকাশ দাও
তাহলে আমি তার সমস্ত সন্তান-সন্ততির মূলোচ্ছেদ করে দেবো
মাত্র সামান্য কজনই আমার হাত থেকে নিস্তার পাবে।৬২

আল্লাহ বললেন, “ঠিক আছে, তুমি যাও,
এদের মধ্য থেকে যারাই তোমার অনুসরণ করবে
তুমিসহ তাদের সবার জন্য জাহান্নামই হবে পূর্ণ প্রতিদান।৬৩

 তুমি যাকে যাকে পারো তোমার দাওয়াতের মাধ্যমে পদস্খলিত করো
তাদের ওপর অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনীর আক্রমণ চালাও
ধন-সম্পদে ও সন্তান-সন্ততিতে তাদের সাথে শরীক হয়ে যাও 
এবং তাদেরকে প্রতিশ্রুতির জালে আটকে ফেলো,
আর শয়তানের প্রতিশ্রুতি ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই নয়৬৪
  
নিশ্চিতভাবেই আমার বান্দাদের ওপর
তোমার কোনো কর্তৃত্ব অর্জিত হবে না 
এবং ভরসা করার জন্য তোমার প্রভূই যথেষ্ট।৬৫

তোমাদের (আসল) প্রভূ তো তিনিই
যিনি সমুদ্রে তোমাদের নৌযান পরিচালনা করেন
যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ তালাশ করতে পারো। 
আসলে তিনি তোমাদের অবস্থার প্রতি বড়ই করুণাশীল।৬৬

 যখন সাগরে তোমাদের ওপর বিপদ আসে
তখন সেই একজন ছাড়া
আর যাকে তোমরা ডাকো সবাই অন্তর্হিত হয়ে যায়।  
কিন্তু যখন তিনি তোমাদের রক্ষা করে স্থলদেশে পৌঁছিয়ে দেন
তখন তোমরা তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও।
মানুষ সত্যিই বড়ই অকৃতজ্ঞ।৬৭

 আচ্ছা, তাহলে তোমরা কি এ ব্যাপারে একেবারেই নির্ভীক যে,
আল্লাহ কখনো স্থলদেশেই
তোমাদেরকে যমীনের মধ্যে প্রোথিত করে দেবেন না
অথবা তোমাদের ওপর পাথর বর্ষণকারী ঘূর্ণি পাঠাবেন না
এবং তোমরা তার হাত থেকে বাঁচার জন্য কোন সহায়ক পাবে না?৬৮

 আর তোমাদের কি এ ধরনের কোন আশঙ্কা নেই যে,
আল্লাহ আবার কোন সময় তোমাদের সাগরে নিয়ে যাবেন
এবং তোমাদের অকৃতজ্ঞতার দরুন তোমাদের বিরুদ্ধে
প্রচণ্ড ঘূর্ণি পাঠিয়ে তোমাদের ডুবিয়ে দেবেন
এবং তোমরা এমন কাউকে পাবে না যে,
তাঁর কাছে তোমাদের এ পরিণতির জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে?৬৯

 এতো আমার অনুগ্রহ,
আমি বনী আদমকে মর্যাদা দিয়েছি
এবং তাদেরকে জলে-স্থলে সওয়ারী দান করেছি,
তাদেরকে পাক-পবিত্র জিনিস থেকে জীবনোপকরন দিয়েছি
এবং নিজের বহু সৃষ্টির ওপর তাদেরকে সুস্পষ্ট প্রাধান্য দিয়েছি।৭০


তারপর সেই দিনের কথা মনে করো
যেদিন আমি মানুষের প্রত্যেকটি দলকে
তার নেতা সহকারে ডাকবো।
সেদিন যাদের গ্রন্থ তাদের ডান হাতে দেয়া হবে
তারা নিজেদের কার্যকলাপ পাঠ করবে 
এবং তাদের ওপর সামান্যতমও জুলুম করা হবে না। ৭১

 আর যে ব্যক্তি এ দুনিয়াতে অন্ধ হয়ে থাকে
সে আখেরাতেও অন্ধ হয়েই থাকবে
বরং পথ লাভ করার ব্যাপারে সে অন্ধের চেয়েও বেশী ব্যর্থ।৭২

 তোমার কাছে আমি যে অহী পাঠিয়েছি
তা থেকে তোমাকে ফিরিয়ে রাখার জন্য
এ লোকেরা তোমাকে বিভ্রাটের মধ্যে ঠেলে দেবার প্রচেষ্টায় কসুর করেনি,
যাতে তুমি আমার নামে নিজের পক্ষ থেকে কোন কথা তৈরি করো। 
যদি তুমি এমনটি করতে তাহলে তারা তোমাকে নিজেদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করতো।৭৩

 আর যদি আমি তোমাকে মজবুত না রাখতাম
তাহলে তোমার পক্ষে তাদের দিকে কিছু না কিছু ঝুঁকে পড়া অসম্ভব ব্যাপার ছিল না।৭৪

কিন্তু যদি তুমি এমনটি করতে
তাহলে আমি এ দুনিয়ায় তোমাকে দ্বিগুণ শাস্তির মজা টের পাইয়ে দিতাম
এবং আখেরাতেও,
তারপর আমার মোকাবিলায় তুমি কোন সাহায্যকারী পেতে না।৭৫

আর এরা এ দেশ থেকে তোমাকে উৎখাত করার
এবং এখান থেকে তোমাকে বের করে দেবার জন্য
প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।
কিন্তু যদি এরা এমনটি করে
তাহলে তোমার পর এরা নিজেরাই এখানে বেশীক্ষণ থাকতে পারবে না।৭৬

 এটি আমার স্থায়ী কর্মপদ্ধতি।
তোমার পূর্বে আমি যেসব বার্তাবাহক পাঠিয়েছিলাম
তাদের সবার ব্যাপারে এ কর্মপদ্ধতি আরোপ করেছিলাম। 
আর আমার কর্মপদ্ধতিতে তুমি কোন পরিবর্তন দেখতে পাবে না।৭৭

প্রার্থনা প্রতিষ্ঠিত করো 
সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে নিয়ে
রাতের অন্ধকার পর্যন্ত 
এবং ভোরে কুরআন পড়ারও ব্যবস্থা করো। 
কারণ ভোরের কুরআন পাঠ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।৭৮

আর একে (আল কোরআন) নিয়ে রাত্রি জাগরণ করো 
এটি তোমার জন্য অতিরিক্ত। 
অচিরেই তোমার প্রভূ তোমাকে প্রশংসিত স্থানে” প্রতিষ্ঠিত করবেন।৭৯

 আর দোয়া করোঃ হে আমার প্রভূ!
আমাকে যেখানেই তুমি নিয়ে যাও
সত্যতার সাথে নিয়ে যাও
এবং যেখান থেকেই বের করো
সত্যতার সাথে বের করো। 
এবং তোমার পক্ষ থেকে
একটি কর্তৃত্বশীল পরাক্রান্ত শক্তিকে
আমার সাহায্যকারী বানিয়ে দাও।৮০

 আর ঘোষণা করে দাও,
সত্য এসে গেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়ে গেছে,
মিথ্যার তো বিলুপ্ত হবারই কথা।৮১

 আমি এই কুরআনের অবতরণ প্রক্রিয়ায়
এমন সব বিষয় অবতীর্ণ করছি
যা মুমিনদের জন্য নিরাময় ও করুণা
এবং জালেমদের জন্য ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করে না।৮২

 মানুষের অবস্থা হচ্ছে এই যে,
যখন আমি তাকে অনুগ্রগ দান করি
তখন সে গর্ব করে ও পিঠ ফিরিয়ে নেয়
এবং যখন সামান্য বিপদের মুখোমুখি হয়
তখন হতাশ হয়ে যেতে থাকে।৮৩

এদেরকে বলে দাও,
প্রত্যেকে নিজ নিজ পথে কাজ করছে,
এখন একমাত্র তোমাদের প্রভূই ভাল জানেন
কে আছে সরল-সঠিক পথে।৮৪

 এরা তোমাকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করছে।
বলে দাও, “রূহ হচ্ছে আমার প্রভুর একটি আদেশ।
কিন্তু তোমরা সামান্য জ্ঞানই লাভ করেছো।৮৫

 আমি চাইলে তোমার কাছ থেকে
সবকিছুই ছিনিয়ে নিতে পারতাম,
যা আমি অহীর মাধ্যমে তোমাকে দিয়েছি,
তারপর তুমি আমার মোকাবিলায় কোন সহায়ক পাবে না,
যে তা ফিরিয়ে আনতে পারে।৮৬

 এই যে যা কিছু তুমি লাভ করেছো,
এসব তোমার প্রভুর আদেশ,
আসলে তাঁর অনুগ্রহ তোমার প্রতি অনেক বড়। ৮৭

 বলে দাও,
যদি মানুষ ও জিন সবাই মিলে কুরআনের মতো
কোন একটি জিনিস আনার চেষ্টা করে
তাহলে তারা আনতে পারবে না,
তারা পরস্পরের সাহায্যকারী হয়ে গেলেও।৮৮

 আমি এ কুরআনে লোকদেরকে নানাভাবে বুঝিয়েছি
কিন্তু অধিকাংশ লোক অস্বীকার করার ওপরই অবিচল থাকে।৮৯

 তারা বলে, “আমরা তোমার কথা মানবো না
যতক্ষণ না তুমি ভূমি বিদীর্ণ করে আমাদের জন্য
একটি ঝরণাধারা উৎসারিত করে দেবে।৯০

 অথবা তোমার খেজুর ও আংগুরের একটি বাগান হবে
এবং তুমি তার মধ্যে প্রবাহিত করে দেবে নদী-নালা।৯১

 অথবা তুমি আকাশ ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে
তোমার হুমকি অনুযায়ী আমাদের ওপর ফেলে দেবে।
অথবা আল্লাহ‌ ও ফেরেশতাদেরকে আমাদের সামনে নিয়ে আসবে।৯২
  
অথবা তোমার জন্য সোনার একটি ঘর তৈরি হবে।
অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করবে
এবং তোমার আরোহণ করার কথাও আমরা বিশ্বাস করবো না
যতক্ষণ না তুমি আমাদের প্রতি একটি লিখিত পত্র আনবে,
যা আমরা পড়বো।
এদেরকে বলো, পবিত্র আমার প্রভূ,
আমি কি একজন বাণীবাহক মানুষ ছাড়া অন্য কিছু?৯৩

 লোকদের কাছে যখনই কোন পথনির্দেশ আসে
তখন তাদের একটা কথাই
তাদের বিশ্বাসী হওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেয়।
কথাটা এই যে, “আল্লাহ কি মানুষকে বার্তাবাহক বানিয়ে পাঠিয়েছেন?”৯৪

 তাদেরকে বলো,
যদি পৃথিবীতে ফেরেশতারা নিশ্চিন্তভাবে চলাফেরা করতো
তাহলে নিশ্চয়ই আমি কোনো ফেরেশতাকেই
তাদের কাছে রসূল বানিয়ে পাঠাতাম।৯৫

 তাদেরকে বলে দাও,
আমারও তোমাদের শুধু একমাত্র আল্লাহর সাক্ষ্যই যথেষ্ট।
তিনি নিজের বান্দাদের অবস্থা জানেন এবং সবকিছু দেখছেন।৯৬

 যাকে আল্লাহ পথ দেখান সে-ই পথ লাভ করে
এবং যাদেরকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন
তাদের জন্য তুমি তাঁকে ছাড়া
আর কোন সহায়ক ও সাহায্যকারী পেতে পারো না। 
এ লোকগুলোকে আমি কিয়ামতের দিন
উপুড় করে টেনে আনবো অন্ধ, বোবা ও বধির করে। 
এদের আবাস হচ্ছে নরক।
যখনই তার আগুন স্তিমিত হতে থাকবে
আমি তাকে আরো জোরে জ্বালিয়ে দেবো।৯৭

 এটা হচ্ছে তাদের এ কাজের প্রতিদান যে,
তারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছে
এবং বলেছে যখন আমরা শুধুমাত্র হাড় ও মাটি হয়ে যাবো
তখন কি আবার আমাদের নতুন করে পয়দা করে উঠানো হবে?৯৮

 তারা কি খেয়াল করেনি,
যে আল্লাহ‌ পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলী সৃষ্টি করেছেন
তিনি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করার অবশ্যই ক্ষমতা রাখেন?
তিনি তাদের হাশরের জন্য একটি সময় নির্ধারণ করে রেখেছেন,
যার আগমন অবধারিত।
কিন্তু জালেমরা জিদ ধরেছে যে তারা তা অস্বীকারই করে যাবে।৯৯

 এদেরকে বলে দাও,
যদি আমার প্রভুর করুণার ভাণ্ডার তোমাদের অধীনে থাকতো
তাহলে তোমরা ব্যয় হয়ে যাবার আশঙ্কায়
নিশ্চিতভাবেই তা ধরে রাখতে।
সত্যিই মানুষ বড়ই সংকীর্ণমনা।১০০

 আমি মূসাকে নয়টি নিদর্শন দিয়েছিলাম,
সেগুলো সুস্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। 
এখন নিজেরাই তোমরা ইসরাঈলের সন্তানদের
জিজ্ঞেস করে দেখে নাও
যখন সেগুলো তাদের সামনে এলো
তখন ফেরাউন তো একথাই বলেছিল,
হে মূসা! আমার মতে তুমি অবশ্যই একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তি।১০১

 মূসা এর জবাবে বললো,
তুমি খুব ভাল করেই জানো
এ প্রজ্ঞাময় নিদর্শনগুলো আকাশ ও পৃথিবীর প্রভূ ছাড়া
আর কেউ অবতীর্ন করেননি। 
আর আমার মনে হয় হে ফেরাউন!
তুমি নিশ্চয়ই একজন হতভাগা ব্যক্তি।১০২

 শেষ পর্যন্ত ফেরাউন মূসা ও বনী ইস্রাঈলকে
দুনিয়ার বুক থেকে উৎখাত করার সংকল্প করলো।
কিন্তু আমি তাকে ও তার সঙ্গী-সাথীদেরকে এক সাথে ডুবিয়ে দিলাম। ১০৩

 এবং এরপর ইসরাঈলের সন্তানদেরকে বললাম,
এখন তোমরা পৃথিবীতে বসবাস করো
তারপর যখন পরকালের প্রতিশ্রুতির সময় এসে যাবে
তখন আমি তোমাদের সবাইকে এক সাথে হাযির করবো।১০৪

 এ কুরআনকে আমি সত্য সহকারে অবতীর্ন করেছি
এবং সত্য সহকারেই এটি অবতীর্ন হয়েছে।
তোমাকে আমি এছাড়া আর কোন কাজে পাঠাইনি যে,
(যে মেনে নেবে তাকে) সুসংবাদ দিয়ে দেবে
এবং (যে মেনে নেবে না তাকে) সাবধান করে দেবে।১০৫
  
আর এ কুরআনকে আমি সামান্য সামান্য করে অবতীর্ন করেছি,
যাতে তুমি থেমে থেমে তা লোকদেরকে শুনিয়ে দাও
এবং তাকে আমি (বিভিন্ন সময়) পর্যায়ক্রমে অবতীর্ন করেছি।১০৬

 এদেরকে বলে দাও,
তোমরা একে মানো বা না মানো,
যাদেরকে এর আগে জ্ঞান দেয়া হয়েছে 
তাদেরকে যখন এটা শুনানো হয়
তখন তারা আনত মস্তকে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে। ১০৭
  
এবং বলে ওঠে, “পবিত্র আমাদের প্রভূ,
আমাদের প্রভুর প্রতিশ্রুতি তো পূর্ণ হয়েই থাকে।১০৮
  
এবং তারা নত মুখে কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে
এবং তা শুনে তাদের দ্বীনতা আরো বেড়ে যায়।১০৯
  
এদেরকে বলে দাও,
আল্লাহ‌ বা দয়াময় যে নামেই ডাকো না কেন,
তাঁর জন্য সবই ভাল নাম। 
আর নিজের প্রার্থনা খুব বেশী উচ্চ কণ্ঠেও পড়বে না,
বেশী ক্ষীণ কণ্ঠেও না,
বরং এ দুয়ের মাঝামাঝি মধ্যম পর্যায়ের কণ্ঠস্বর অবলম্বন করবে।১১০
  
আর বলো, সেই আল্লাহর প্রশংসা,
যিনি কোন পুত্রও গ্রহণ করেননি।
তাঁর বাদশাহীতে কেউ শরীকও হয়নি
এবং তিনি এমন অক্ষমও নন যে,
কেউ তাঁর সাহায্যকারী ও নির্ভর হবে।” 

আর তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করো, চূড়ান্ত পর্যায়ের শ্রেষ্ঠত্ব।১১১

No comments:

Post a Comment