Thursday, May 29, 2014

১৮৪. হিন্দু ধর্মগ্রন্থ


যাদের বিচার-বুদ্ধি কেড়ে নিয়েছে পার্থিব আকাঙ্ঘা তারা অপদেবতার উপাসনা করে অর্থ্যাত 'যারা জড়বাদী তারাই শুধু অপদেবতার উপাসনা করে। ভগবদগীতাঃ ৭.২০

তিনি সেই সত্তা যিনি আমাকে জন্মের পূর্বে থেকেই জানেন, যার কোনো আদি নেই, তিনি হচ্ছেন জগটসমূহের সর্ময় কর্তৃত্বের অধিকারী প্রভূ। ভগবদগীতাঃ ১০.৩


মহাজ্ঞানীরা এক প্রভূকে বিভিন্ন নামে ডাকে। ঋগবেদঃ ১.৬৪.৪৬

তাঁর ব্যাপারে কোনো কল্পনা করা যায় না। তিনি হচ্ছেন এমন সত্তা যিনি জন্মগ্রহন করেননি, তিনি আমাদের উপাসনার যোগ্য। (জজুরবেদ.৩২.৩)

তিনি হচ্ছেন নিরাকার এবং বিশুদ্ধ। (জজুরবেদঃ ৪০.৮)

তারা অন্ধকারে প্রবেশ করে যারা প্রাকৃতিক বস্তুর পূজা করে। (জজুরবেদঃ ৪০.৯)

প্রভূ অত্যন্ত মহান। (অথর্ববেদঃ ২.৫৮.৩)

তিনি একজন ব্রহ্ম। (ঋগবেদ বই-২, স্তুতিবাচক শ্লোক-৩)। ব্রহ্ম শব্দটির অর্থ স্রষ্টা। শব্দটির আরবী অনুবাদ করলে দাঁড়ায় 'খালিক'। ইসলাম মহান প্রভূকে খালিক বা ব্রহ্ম বা স্রষ্টা বলে ডাকতে নিষেধ করে না। কিন্তু কেউ যদি বলে ব্রহ্ম, তথা সর্বশক্তিমান প্রভূর চারটি মাথা আর প্রতি মাথায় একটি মুকুট এবং চারটি হাত আছে, তবে এক্ষেত্রে ইসলামের প্রবল আপত্তি রয়েছে। কারণ এ ধরনের বর্ণনা সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে মানুষের মনে কল্পনার সৃষ্টি করে। আর এ বর্ণনা জজুরবেদের ৩২ নং অধ্যায়ের ৩ নং শ্লোকে উল্লিখিত বর্ণনার সম্পূর্ণ বিপরীত। কেননা সেখানে বলা হয়েছে, 'তাঁর সম্পর্কে কল্পনাও করা যায় না' অর্থ্যাত স্রষ্টার কোনো প্রতিমূর্তি নেই।

বিষ্ণু অর্থ পালনকর্তাঃ
 ঋগবেদে প্রভূর আরেকটি সুন্দর গুণের কথা বলা হয়েছে। যেমন বই-২, স্তুতিস্তাবক-১, শ্লোক নং-৩ এ বিষ্ণুর উল্লেখ আছে। 'বিষ্ণু' শব্দটির অর্থ হচ্ছে রক্ষাকর্তা বা পালনকর্তা। আপনি যদি এ শব্দটিকে আরবিতে অনুবাদ করেন তাহলে এর অর্থ দাঁড়ায় 'রব'। আর কেউ যদি সর্বশক্তিমান প্রভূকে 'রব', 'রক্ষাকর্তা' কিংবা 'বিষ্ণু' হিসেবে আখ্যায়িত করে তাতে ইসলামের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু যদি কেউ বলে যে বিষ্ণুই হলেন সেই ঈশ্বর যিনি বসে আছেন সাপকে আসন বানিয়ে, সমূদ্রের নীচে ভ্রমণ করেন, গরুর নামক এক পাখির পিঠে চড়ে আকাশে উড়ে বেড়ান, তার চারটি হাত আছে, ডান হাতদ্বয়ের একটি হাত দ্বারা শংখ বর্ম এবং বিষ্ণু পাখি কিংবা সাপের ছোবলের বাহনে উপবিষ্ট তাহলে এক্ষেত্রে ইসলামের ঘোর আপত্তি আছে। কারণ, বিষ্ণুর এ ধরনের বর্ণনা সর্বশক্তিমান প্রভূর আকৃতি সম্পর্কে ধারণার সৃষ্টি করে। আর এ বর্ণনা জজুরবেদের ৩২ নং অধ্যায়ের ৩ নং অনুচ্ছেদে বর্ণনার [সেখানে বলা হয়েছে, না আস্তি প্রতিমা আস্তি অর্থ্যাত সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিপালকের কোনো প্রতিমূর্তি নেই।] সম্পূর্ণ বিপরীত।

# ঋগবেদ খন্ড-৮, স্তুতিবাচন অনুচ্ছেদ-১, শ্লোক নং-১ এ বলা হয়েছে- !মা চদিনদি সানসাদ, অর্থ্যাত 'তিনি (প্রভূ) ব্যতীত অন্য কারো উপাসনা করো না। তিনি একমাত্র স্বর্গীয়। কেবল তাঁরই প্রশংসা করো।' (ঋগবেদ সমিতি, খন্ড-৯, পৃষ্ঠা-১ ও ২)

# ঋগবেদ খন্ড-৫, স্তুতিস্তাবক-৮১, শ্লোক নং-১ এ বলা হয়েছে- 'সত্যিই স্বর্গীয় স্রষ্টার গৌরব অত্যন্ত সুমহান।' (ঋগবেদ সমিতি, খন্ড-৬, পৃষ্ঠা-১৮০২ ও ১৮০৩)

#ঋগবেদ খন্ড-৬, স্তুতিস্তাবক-৪৫, এর ১৬ শ্লোকে বলা হয়েছে- 'তাঁরই প্রশংসা করো যার কোনো তুলনা নেই এবং তিনি একক।' (র‍্যাঙ্ক টি এইচ গ্রিফথ কর্তৃক রচিত ঋগবেদ, পৃষ্ঠা-৬৪৮)

হিন্দু বেদান্তের ব্রহ্মসূত্রঃ
হিন্দু বেদান্তের ব্রহ্মসূত্র হচ্ছে- "এক কম ব্রাহম দিউতা নাস্তি নেহনা নাস্তি কিঞ্চন" অর্থ্যাত 'সৃষ্টিকর্তা কেবল একজন এবং দ্বিতীয় কোনো দেবতা নেই, আদৌ নেই, কখনো ছিল না এবং কখনো হবে না।'
হিন্দুধর্মের প্রকৃত ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে নেয়া এসব ধারা স্পষ্টভাবে স্রষ্টা সর্বশক্তিমান প্রভূর একত্ব এবং অদ্বিতীয়তা প্রমাণ করে। উপরন্তু এসব ধারা স্পষ্টভাবে স্রষ্টা সর্বশক্তিমান প্রভূর একত্ব এবং অদ্বিতীয়তা প্রমাণ করে। উপরন্তু এসব ধারা সত্য প্রভূ একক আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য দেবতার অস্তিত্বকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে। এসব ধারা অত্যন্ত সুন্দরভাবে একেশ্বরবাদ তথা তাওহীদের ধারণাকে স্পষ্ট করে। কেউ যদি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে হিন্দুধর্ম গ্রন্থসমূহ অধ্যয়ন করেন তবে তিনি হিন্দুধর্মের প্রভূ সম্পর্কিত যথার্থ ধারণা বুঝতে ও উপলব্ধি করতে পারবেন।

১৮৩. Mostafa Wahiduzzaman QSRF - ঈমান : Iman Vs Kalima e Shahadah [96:1]

১৮২. জ্বীনেরা অদৃশ্যের খবর জানে না। সূতরাং মানুষের মনের খবর জানার প্রশ্নই আসে না।

তারপর যখন সুলাইমানের ওপর আমি মৃত্যুর ফায়সালা প্রয়োগ করলাম তখন জিনদেরকে তাঁর মৃত্যুর খবর দেবার মতো সেই ঘুণ ছাড়া আর কোন জিনিস ছিল না যা তাঁর লাঠিকে খেয়ে চলছিল। এভাবে যখন সুলাইমান পড়ে গেলো, জিনদের কাছে একথা পরিষ্কার হয়ে গেলো যে, যদি তারা অদৃশ্যের কথা জানতো তাহলে এ লাঞ্ছনাকর শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না। সূরা আস সাবা/১৪।

Wednesday, May 28, 2014

১৮১.৩. প্রার্থনা

প্রার্থনা আল্লাহর সাথে সম্পর্কের মাধ্যম, প্রার্থনায় দাঁড়াবার নিয়মঃ
তোমাদের প্রার্থনাসমূহের ব্যাপারে যত্নশীল হও যাতে তা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরীর মাধ্যম হয়। আল্লাহর সামনে এমনভাবে দাঁড়াও যেমন অনুগত সেবকরা দাঁড়ায়। সূরা আল বাকারাহ/২৩৮

অজু, গোসল ও তায়াম্মুমঃ 
হে বিশ্বাসীগণ! যখন তোমরা প্রার্থনার জন্য তৈরী হও, তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত দু’টি কনুই পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো, মাথার ওপর হাত বুলাও এবং পা দু’টিও গোড়ালী পর্যন্ত। যদি তোমরা ‘স্ত্রী-সহবাস’ পরবর্তী অবস্থায় থাকো, তাহলে পবিত্র হয়ে নাও। যদি তোমরা রোগগ্রস্ত হও বা সফরে থাকো অথবা তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি মলমূত্র ত্যাগ করে আসে বা তোমরা নারীদেরকে স্পর্শ করে থাকো এবং পানি না পাও, তাহলে পাক-পবিত্র মাটি দিয়ে কাজ সেরে নাও। তার ওপর হাত রেখে নিজের চেহারা ও হাতের ওপর মুছে নাও। আল্লাহ তোমাদের জন্য জীবনকে সংকীর্ণ করে দিতে চান না কিন্তু তিনি চান তোমাদেরকে পাক-পবিত্র করতে এবং তাঁর অনুগ্রহ তোমাদের ওপর সম্পূর্ণ করে দিতে, হয়তো তোমরা কৃতজ্ঞ হবে। সূরা আল মায়েদাহ-৬।
কিয়াম, সেজদা, সমবেত প্রার্থনা, প্রার্থনার নির্ধারিত সময়ে করা আবশ্যকঃ
যখন তুমি মুসলমানদের মধ্যে থাকো এবং (যুদ্ধাবস্থায়) তাদেরকে নিয়ে প্রার্থনার জন্য দাঁড়াও তখন তাদের মধ্য থেকে একটি দলের তোমার সাথে দাঁড়িয়ে যাওয়া উচিত এবং তারা অস্ত্রসস্ত্র সঙ্গে নেবে। তারপর তারা সিজদা করে নিলে পেছনে চলে যাবে এবং দ্বিতীয় দলটি, যারা এখনো প্রার্থনা করেনি, তারা এসে তোমার সাথে প্রার্থনায় শামিল হবে। আর তারাও সতর্ক থাকবে এবং নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র বহন করবে। কারণ অবিশ্বাসীরা সুযোগের অপেক্ষায় আছে, তোমরা নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র ও জিনিস পত্রের দিক থেকে সামান্য দৃষ্টি ফেরালেই তারা তোমাদের ওপর অকস্মাৎ ঝাঁপিয়ে পড়বে। তবে যদি তোমরা বৃষ্টির কারণে কষ্ট অনুভব করো অথবা অসুস্থ থাকো, তাহলে অস্ত্র রেখে দিলে কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু তবুও সতর্ক থাকো। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ‌ অবিশ্বাসীদের জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। তারপর তোমরা প্রার্থনা শেষ করার পর দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে সব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো। আর মানসিক প্রশান্তি লাভ করার পর যথাযথভাবে প্রার্থনা করো। আসলে নির্ধারিত সময়ে প্রার্থনা করা বিশ্বাসীগণের জন্য আবশ্যক করা হয়েছে। সূরা নিসা/১০২-১০৩।
 প্রার্থনায় আওয়াজ মাঝামাঝি রাখাঃ
এদেরকে বলে দাও, আল্লাহ‌ বা দয়াময় যে নামেই ডাকো না কেন, তাঁর জন্য সবই ভাল নাম। আর নিজের প্রার্থনা খুব বেশী উচ্চ কণ্ঠেও করবে না, বেশী ক্ষীণ কণ্ঠেও না, বরং এ দু’য়ের মাঝামাঝি মধ্যম পর্যায়ের কণ্ঠস্বর অবলম্বন করবে। সূরা বনী ইসরাঈল-১১০।


প্রার্থনায় আল্লাহর কাছে যা প্রার্থনা করছি তা অবশ্যই বুঝে শুনে করতে হবেঃ
 হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রার্থনার কাছেও যেও না। প্রার্থনা সেই সময় করা উচিত যখন তোমরা যা বলছো তা জানতে পারো। অনুরূপভাবে অপবিত্র অবস্থায়ও  তা ধৌত না করা পর্যন্ত প্রার্থনার কাছে যেয়ো না। তবে যদি পথ অতিক্রমকারী হও, তাহলে অবশ্যি স্বতন্ত্র কথা। আর যদি কখনো তোমরা অসুস্থ হয়ে পড়ো, সফরে থাকো বা তোমাদের কেউ মলমূত্র ত্যাগ করে আসে অথবা তোমরা নারী সম্ভোগ করে থাকো এবং এরপর পানি না পাও, তাহলে পাক–পবিত্র মাটির সাহায্য গ্রহণ করো এবং তা নিজেদের চেহারা ও হাতের ওপর বুলাও। নিঃসন্দেহে আল্লাহ‌ কোমলতা অবলম্বনকারী ও ক্ষমাশীল। সূরা নিসা/৪৩।

প্রার্থনায় বিনয়ী থাকাঃ
যারা নিজেদের প্রার্থনায় বিনীত থাকে। সূরা আল মুমিনুন/২।

প্রার্থনায় যা বলতে হবেঃ
﴿ وَقُل رَّبِّ اَدۡخِلۡنِىۡ مُدۡخَلَ صِدۡقٍ وَّاَخۡرِجۡنِىۡ مُخۡرَجَ صِدۡقٍ وَّاجۡعَل لِّىۡ مِنۡ لَّدُنۡكَ سُلۡطٰنًا نَّصِيۡرًا‏﴾



আর বলো, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমাকে যেখানেই তুমি নিয়ে যাও সত্যতার সাথে নিয়ে যাও এবং যেখান থেকেই বের করো সত্যতার সাথে বের করো। এবং তোমার পক্ষ থেকে একটি কর্তৃত্বশীল পরাক্রান্ত শক্তিকে আমার সাহায্যকারী বানিয়ে দাও।
﴿ وَقُلۡ جَآءَ الۡحَقُّ وَزَهَقَ الۡبَاطِلُ‌ؕ اِنَّ الۡبَاطِلَ كَانَ زَهُوۡقًا﴾

আর ঘোষণা করে দাও, “সত্য এসে গেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়ে গেছে, মিথ্যার তো বিলুপ্ত হবারই কথা।” সূরা বনী ইসরাঈল/৮০-৮১।


﴿ وَقُلِ الۡحَمۡدُ لِلّٰهِ الَّذِىۡ لَمۡ يَتَّخِذۡ وَلَدًا وَّلَمۡ يَكُنۡ لَّهٗ شَرِيۡكٌ فِىۡ الۡمُلۡكِ وَلَمۡ يَكُنۡ لَّهٗ وَلِىٌّ مِّنَ الذُّلِّ‌ؕ وَكَبِّرۡهُ تَكۡبِيۡرًا‏﴾


আর বলো, সেই আল্লাহর প্রশংসা, যিনি কোন পুত্রও গ্রহণ করেননি। তাঁর বাদশাহীতে কেউ শরীকও হয়নি এবং তিনি এমন অক্ষমও নন যে, কেউ তাঁর সাহায্যকারী ও নির্ভর হবে। আর তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করো, চূড়ান্ত পর্যায়ের শ্রেষ্ঠত্ব। সূরা বনী ইসরাঈল/১১১।
 
প্রার্থনার সময়ঃ
(জীবনের সকল স্তরে) প্রার্থনা প্রতিষ্ঠিত করো সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে নিয়ে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত এবং ফজরে কুরআন পড়ারও ব্যবস্থা করো। কারণ ফজরের কুরআন পাঠ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।  আর একে (কোরআন) নিয়ে রাত্রি জাগরণ কর। এটি তোমার জন্য অতিরিক্ত। অচিরেই তোমার রব তোমাকে “প্রশংসিত স্থানে” প্রতিষ্ঠিত করবেন। সূরা বনী ইসরাঈল/৭৮-৭৯।

প্রার্থনা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে শুধু আল্লাহর স্মরনের জন্যঃ
আমিই আল্লাহ, আমি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, কাজেই তুমি আমার গোলামী করো এবং আমাকে স্মরণ করার জন্য (জীবনের সকল স্তরে) প্রার্থনা প্রতিষ্ঠিত করো। সূরা ত্বহা/১৪।

১৮০. জামাতে নামাজ (সমবেত প্রার্থনা)

(জীবনের সকল স্তরে) প্রার্থনা প্রতিষ্ঠিত করো, পরিশুদ্ধির জন্য দান করো এবং যারা আমার সামনে অবনত হচ্ছে তাদের সাথে তোমরাও অবনত হও। 
সূরা আল বাকারাহ/৪৩।
জামাতে নামাজ ফরজ হওয়ার প্রমান হিসেবে এই আয়াতটিকে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু একই রকম আদেশ আল্লাহ মারয়াম (আঃ) কে দিয়েছিলেন। আল্লাহ বলেন,
হে মারয়াম! তোমার রবের আদেশের অনুগত হয়ে থাকো। তাঁর সামনে সিজদাবনত হও এবং যেসব বান্দা তাঁর সামনে অবনত হয় তুমিও তাদের সাথে অবনত হও।” 
সূরা আলে ইমরান/৪৩।

১৭৯. যাকাত কত পার্সেন্ট???


হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা সাধারণ নারীদের মতো নও। যদি তোমরা আল্লাহকে অসন্তুষ্টিকে ভয় করে থাকো, তাহলে মিহি স্বরে কথা বলো না, যাতে মনের গলদে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি প্রলুব্ধ হয়ে পড়ে, বরং পরিষ্কার সোজা ও স্বাভাবিকভাবে কথা বলো। নিজেদের গৃহ মধ্যে অবস্থান করো। এবং পূর্বের জাহেলী যুগের মতো সাজসজ্জা দেখিয়ে বেড়িও না। (জীবনের সকল স্তরে) প্রার্থনা প্রতিষ্ঠিত করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহ‌ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করো। আল্লাহ‌ তো চান, তোমাদের নবী পরিবার থেকে ময়লা দূর করতে এবং তোমাদের পুরোপুরি পাক-পবিত্র করে দিতে। সূরা আল আহযাব/৩২-৩৩।
আল্লাহ নবীর স্ত্রীগণকে যাকাত দেয়ার নির্দেশ দিলেন এই আয়াতে। আল্লাহ কি জানতেন না নবীর ঘরে কোনো ধন-সম্পদ জমা থাকে না? (নাউজুবিল্লাহ)। যাকাত বলতে যদি সেই ২.৫% দেওয়া বুঝায় তাহলেতো এই আয়াত মিলে না। আসলে যাকাত দেওয়া বলতে আল্লাহ কি বুঝাতে চেয়েছেন? এখানে বলা হয়েছে 'আতিনা আয যাকাত'। 'আতিনা' শব্দের অর্থ তোমরা দাও। 'আয যাকাত' শব্দের অর্থ পবিত্রতা, পরিশুদ্ধি, বৃদ্ধিকরন। তাহলে অর্থ দাঁড়ায় তোমরা নিজেদেরকে পরিশুদ্ধ করার জন্য দান করো। যখন যতটুকু সাধ্য থাকে ততটুকুই দান করো। আল্লাহ বলেন,
"তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছেঃ আমরা আল্লাহর পথে কি ব্যয় করবো? বলে দাওঃ যা কিছু তোমাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়।" সূরা বাকারা/২২০।
দানের ব্যাপারে ভারসাম্য রক্ষা করতে বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন,  
"নিজের হাত গলায় বেঁধে রেখো না এবং তাকে একেবারে খোলাও ছেড়ে দিয়ো না, তাহলে তুমি নিন্দিত ও অক্ষম হয়ে যাবে।" সূরা বনী ইসরাঈল/২৯।

যাকাতের খাতগুলো হচ্ছে,
এ সাদকা গুলো তো আসলে ফকীর, মিসকীনদের জন্য। আর যারা সাদকা সংক্রান্ত কাজে নিযুক্ত এবং যাদের জন্য মন জয় করা প্রয়োজন তাদের জন্য। তাছাড়া দাস মুক্ত করার, ঋণগ্রস্তদের সাহায্য করার, আল্লাহর পথে এবং মুসাফিরদের উপকারে ব্যয় করার জন্য। এটা আল্লাহর পক্ষে থেকে একটি বিধান এবং আল্লাহর সবকিছু জানেন, তিনি বিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ। সূরা আত তওবা/৬০।
(এগুলো আমার নিজের বুঝ। কোরআন পড়ে আমি যা বুঝেছি তাই লিখলাম। দয়া করে কেউ বিতর্ক করবেন না।)

Monday, May 26, 2014

১৭৮. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ছাড়া কেউ মুক্তি পাবে না

লোকেরা কি মনে করে রেখেছে,
“আমরা বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন করেছি”
কেবলমাত্র একথাটুকু বললেই তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে,
আর পরীক্ষা করা হবে না?
অথচ আমি তাদের পূর্ববর্তীদের সবাইকে পরীক্ষা করে নিয়েছি
আল্লাহ অবশ্যই দেখবেন কে সত্যবাদী এবং কে মিথ্যুক।
সূরা আল আনকাবুত/২-৩।

তোমরা কি মনে করে রেখেছো 
তোমরা এমনিতেই জান্নাতে প্রবেশ করবে? 
অথচ এখনো আল্লাহ‌ দেখেনইনি, 
তোমাদের মধ্যে কে তাঁর পথে 
প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালায় এবং দৃড় অবিচল থাকে।
(সূরা আলে ইমরানঃ ১৪২)

আমি তোমাদের কে অবশ্যই পরীক্ষা করবো 
যাতে আমি তোমাদের অবস্থা যাচাই করে দেখে নিতে পারি যে, 
তোমাদের মধ্যে কে তাঁর পথে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালায়
এবং কে দৃড় অবিচল থাকে। 
(সূরা মুহাম্মদঃ ৩১)

Sunday, May 25, 2014

১৭৭. সময় গননা

 লোকেরা তোমাকে চাঁদ ছোট বড়ো হওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছে। বলে দাওঃ এটা হচ্ছে লোকদের জন্য তারিখ নির্ণয় ও হজ্জ্বের আলামত তাদেরকে আরো বলে দাওঃ তোমাদের পেছন দিক দিয়ে গৃহে প্রবেশ করার মধ্যে কোন নেকী নেই। আসলে পূণ্য রয়েছে আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেকে বাঁচার মধ্যেই, কাজেই তোমরা দরজা পথেই নিজেদের গৃহে প্রবেশ করো। তবে আল্লাহর অসন্তোষ থেকে বেঁচে থাক, হয়তো তোমরা সাফল্য লাভে সক্ষম হবে। সূরা আল বাকারাহ/১৮৯।

আসলে যখন আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তখন থেকেই আল্লাহর লিখন ও গণনায় মাসের সংখ্যা বারো চলে আসছে৷ এর মধ্যে চারটি হারাম মাস৷ এটিই সঠিক বিধান৷ কাজেই এ চার মাসের নিজেদের ওপর জুলুম করো না ৷ আর মুশরিকদের সাথে সবাই মিলে লড়াই করো যেমন তারা সবাই মিলে তোমাদের সাথে লড়াই করে৷ এবং জেনে রাখো আল্লাহ মুক্তাকীদের সাথেই আছেন৷  সূরা আত তওবা/৩৬।

তিনিই সূর্যকে করেছেন দীপ্তিশালী ও চন্দ্রকে আলোকময় এবং তার মঞ্জিলও ঠিকমত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যাতে তোমরা তার সাহায্যে বছর গণনা ও তারিখ হিসেব করতে পারো। আল্লাহ‌ এসব কিছু (খেলাচ্ছলে নয় বরং) উদ্দেশ্যমূলকভাবেই সৃষ্টি করেছেন। তিনি নিজের নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে পেশ করেছেন যারা জ্ঞানবান তাদের জন্য। সূরা ইউনূস/৫।

Thursday, May 22, 2014

১৭৬. মজলুমরা ক্ষমতাসীন হবে এবং জালেমদের ধ্বংস করে দেয়া হবে মজলুমদেরই মাধ্যমে। এটাই আল্লাহর সুন্নত।

আমি সংকল্প করেছিলাম, যাদেরকে পৃথিবীতে লাঞ্ছিত করে রাখা হয়েছিল তাদের প্রতি অনুগ্রহ করবো, তাদেরকে নেতৃত্ব দান করবো, তাদেরকেই উত্তরাধিকারী করবো,  পৃথিবীতে তাদেরকে কর্তৃত্ব দান করবো। এবং তাদের থেকে ফেরাউন, হামান ও তার সৈন্যদেরকে সে সবকিছুই দেখিয়ে দেবো, যার আশঙ্কা তারা করতো। সূরা আল কাসাস/৫-৬।

১৭৫. শয়তানের গল্প

সূরা আস সাদ
৬৭) এদেরকে বলো, “এটি একটি মহাসংবাদ
৬৮) যা শুনে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও৷”
৬৯) (এদেরকে বলো) “উর্ধলোকে যখন বিতর্ক হচ্ছিল সে সময়ের কোন জ্ঞান আমার ছিল না৷
৭০) আমাকে তো অহীর মাধ্যমে একথাগুলো এ জন্য জানিয়ে দেয়া হয় যে আমি সুস্পষ্ট সতর্ককারী৷”
৭১) যখন তোমার রব ফেরশ্‌তাদেরকে বললো, “আমি মাটি দিয়ে একটি মানুষ তৈরি করবো৷ 
৭২) তারপর যখন আমি তাকে পুরোপুরি তৈরি করে ফেলবো এবং তার মধ্যে নিজের রূহ ফুঁকে দেবো তখন তোমরা তার সামনে সিজদানত হয়ে যেয়ো৷”
৭৩) এ হুকুম অনুযায়ী ফেরেশ্‌তারা সবাই সিজদানত হয়ে গেলো,
৭৪) কিন্তু ইবলিস নিজে শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার করলো এবং সে কাফেরদের অন্তরভুক্ত হয়ে গেলো৷
৭৫) রব বললেন, “ হে ইবলিস! আমি আমার দু’হাত দিয়ে যাকে তৈরি করেছি তাকে সিজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিয়েছে? তুমি কি বড়াই করছো, না তুমি কিছু উচ্চ মর্যাদার অধিকারী?”
৭৬) সে জবাব দিল, “আমি তার তুলনায় শ্রেষ্ঠ, তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছো আগুন থেকে এবং তাকে মাটি থেকে৷”
৭৭) বললেন, “ঠিক আছে, তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও, তুমি বিতাড়িত
৭৮) এবং প্রতিদান দিবস পর্যন্ত তোমার প্রতি আমার লানত৷”
৭৯) সে বললো, “ হে আমার রব! একথাই যদি হয়ে থাকে, তাহলে এদেরকে যখন পুনরায় উঠানো হবে সে সময় পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দাও৷”
৮০) বললেন, ঠিক আছে, তোমাকে সেদিন পর্যন্ত অবকাশ দেয়া হলো
৮১) যার সময় আমি জানি৷”
৮২) সে বললো, “তোমার ইজ্জতের কসম, আমি এদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করবোই,
৮৩) তবে একমাত্র যাদেরকে তুমি একনিষ্ঠ করে নিয়েছো তাদেরকে ছাড়া৷” বললেন,
৮৪) “তাহলে এটিই সত্য এবং আমি সত্যই বলে থাকি যে,
৮৫) আমি তোমাকে এবং এসব লোকদের মধ্য থেকে যারা তোমার আনুগত্য করবে তাদের সবাইকে দিয়ে জাহান্নাম ভরে দেবো৷”

সূরা হিজর
২৬) আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি শুকনো ঠন্‌ঠনে পচা মাটি থেকে৷
২৭) আর এর আগে জিনদের সৃষ্টি করেছি আগুনের শিখা থেকে৷
২৮) তারপর তখনকার কথা স্মরণ করো যখন তোমার রব ফেরেশতাদের বললেন, আমি শুকনো ঠন্‌ঠনে পচা মাটি থেকে একটি মানুষ সৃষ্টি করছি৷
২৯) যখন আমি তাকে পূর্ণ অবয়ব দান করবো এবং তার মধ্যে আমার রূহ থেকে কিছু ফুঁক দেবো৷ তখন তোমরা সবাই তার সামনে সিজদাবনত হয়ো৷
৩০) সেমতে সকল ফেরেশতা একযোগে তাকে সিজদা করলো,
৩১) ইবলীস ছাড়া, কারণ সে সিজদাকারীদের অন্তরভুক্ত হতে অস্বীকার করলো৷
৩২) আল্লাহ জিজ্ঞেস করলেন, “হে ইবলীস ! তোমার কি হলো, তুমি সিজদাকারীদের অন্তরভুক্ত হলে না ?”
৩৩) সে জবাব দিল, “এমন একটি মানুষকে সিজদা করা আমার মনোপূত নয় যাকে তুমি শুকনো ঠন্‌ঠনে পচা মাটি থেকে সৃষ্টি করেছো৷”
৩৪) আল্লাহ বললেন, “তবে তুমি বের হয়ে যাও এখান থেকে, কেননা তুমি ধিকৃত৷
৩৫) আর এখন কর্মফল দিবস পর্যন্ত তোমার ওপর অভিসম্পাত !
৩৬) সে আরয করলো, হে আমার রব ! যদি তাই হয়, তাহলে সেই দিন পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দাও যেদিন সকল মানুষকে পুনর্বার উঠানো হবে৷
৩৭) বললেন, “ঠিক আছে, তোমাকে অবকাশ দেয়া হলো৷
৩৮) সেদিন পর্যন্ত যার সময় আমার জানা আছে৷
৩৯) সে বললো, “হে আমার রব! তুমি যেমন আমাকে বিপথগামী করলে ঠিক তেমনিভাবে আমি পৃথিবীতে এদের জন্য প্রলোভন সৃষ্টি করে এদের সবাইকে বিপথগামী করবো
৪০) তবে এদের মধ্য থেকে তোমার যেসব বান্দাকে তুমি নিজের জন্য নির্বাচিত করে নিয়েছো তাদের ছাড়া৷
৪১) বললেন, এটিই আমার নিকট পৌঁছুবার সোজা পথ৷ 
৪২) অবশ্যি যারা আমার প্রকৃত বান্দা হবে তাদের ওপর তোমার কোনো জোর খাটবে না৷ তোমার জোর খাটবে শুধুমাত্র এমন বিপথগামীদের ওপর যারা তোমার অনুসরণ করবে
৪৩) এবং তাদের সবার জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তির অংগীকার৷

সূরা বনী ইসরাঈল
৬১) আর স্মরণ করো, যখন আমি ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা করো, তখন সবাই সিজদা করলো কিন্তু ইবলীস করলো না৷ সে বললো, “আমি কি তাকে সিজদা করবো যাকে তুমি বানিয়েছো মাটি দিয়ে ?
৬২) তারপর সে বললো, দেখোতো ভালো করে, তুমি যে একে আমার ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছো, এ কি এর যোগ্য ছিল ? যদি তুমি আমাকে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত অবকাশ দাও তাহলে আমি তার সমস্ত সন্তান সন্ততির মূলোচ্ছেদ করে দেবো, মাত্র সামান্য কজনই আমার হাত থেকে নিস্তার পাবে৷
৬৩) আল্লাহ বললেন, ঠিক আছে, তুমি যাও, এদের মধ্য থেকে যারাই তোমার অনুসরণ করবে তুমিসহ তাদের সবার জন্য জাহান্নামই হবে পূর্ণ প্রতিদান৷
৬৪) তুমি যাকে যাকে পারো তোমার দাওয়াতের মাধ্যমে পদস্খলিত করো, তাদের ওপর অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনীর আক্রমণ চালাও, ধন-সম্পদে ও সন্তান-সন্ততিতে তাদের সাথে শরীক হয়ে যাও  এবং তাদেরকে প্রতিশ্রুতির জালে আটকে ফেলো, আর শয়তানের প্রতিশ্রুতি ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই নয়,
৬৫) নিশ্চিতভাবেই আমার বান্দাদের ওপর তোমার কোনো কর্তৃত্ব অর্জিত হবে না এবং ভরসা করার জন্য তোমার রবই যথেষ্ট৷

সূরা কাহফ
৫০.) স্মরণ করো যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম আদমকে সিজদা করো তখন তারা সিজদা করেছিল কিন্তু ইবলীস করেনি। সে ছিল জিনদের একজন, তাই তার রবের হুকুমের আনুগত্য থেকে বের হয়ে গেলো। এখন কি তোমরা আমাকে বাদ দিয়ে তাকে এবং তার বংশধরদেরকে নিজেদের অভিভাবক বানিয়ে নিচ্ছো অথচ তারা তোমাদের দুশমন? বড়ই খারাপ বিনিময় জালেমরা গ্রহণ করছে!
৫১.) আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করার সময় আমি তাদেরকে ডাকিনি এবং তাদের নিজেদের সৃষ্টিতেও তাদেরকে শরীক করিনি। পথভ্রষ্টকারীদেরকে নিজের সাহায্যকারী করা আমার রীতি নয়। 

সূরা আলা আরাফ
 ১১.) আমি তোমাদের সৃষ্টির সূচনা করলাম তারপর তোমাদের আকৃতি দান করলাম অতঃপর ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা করো। এ নির্দেশ অনুযায়ী সবাই সিজদা করলো। কিন্তু ইবলীস সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হলো না। 
১২.) আল্লাহ জিজ্ঞেস করলেন, “আমি যখন তোকে হুকুম দিয়েছিলাম তখন সিজদা করতে তোকে বাধা দিয়েছিল কিসে?” সে জবাব দিলঃ “আমি তার চাইতে শ্রেষ্ঠ। আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছো এবং ওকে সৃষ্টি করেছো মাটি থেকে।”
১৩.) তিনি বললেনঃ “ঠিক আছে, তুই এখান থেকে নীচে নেমে যা। এখানে অহংকার করার অধিকার তোর নেই। বের হয়ে যা। আসলে তুই এমন লোকদের অন্তর্ভুক্ত, যারা নিজেরাই নিজেদেরকে লাঞ্ছিত করতে চায়।”
 ১৪.) সে বললঃ “আমাকে সেই দিন পর্যন্ত অবকাশ দাও যখন এদের সবাইকে পুনর্বার ওঠানো হবে।” 
 ১৫.) তিনি বললেনঃ “তোকে অবকাশ দেয়া হলো।” 
 ১৬.) সে বললোঃ “তুমি যেমন আমাকে গোমরাহীতে নিক্ষেপ করেছো তেমনি আমিও এখন তোমার সরল-সত্য পথে এ লোকদের জন্য ওঁত পেতে বসে থাকবো,

১৭.) সামনে-পেছনে, ডানে-বায়ে, সবদিক থেকে এদেরকে ঘিরে ধরবো এবং এদের অধিকাংশকে তুমি শোকর গুজার পাবে না।” 

১৮.) আল্লাহ বললেনঃ “বের হয়ে যা এখান থেকে লাঞ্ছিত ও ধিকৃত অবস্থায়। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখিস, এদের মধ্য থেকে যারাই তোর অনুসরণ করবে তাদেরকে এবং তোকে দিয়ে আমি জাহান্নাম ভরে দেবো।
১৯.) আর হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী তোমরা দু'জনাই এ জান্নাতে থাকো। যেখানে যা তোমাদের ইচ্ছা হয় খাও, কিন্তু এ গাছটির কাছে যেয়ো না, অন্যথায় তোমরা জালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।”  
২০.) তারপর তাদের লজ্জাস্থান, যা তাদের পরস্পর থেকে গোপন রাখা হয়েছিল, তাদের সামনে উন্মুক্ত করে দেবার জন্য শয়তান তাদেরকে কুমন্ত্রণা দিল। সে তাদেরকে বললোঃ “তোমাদের রব যে, তোমাদের এ গাছটির কাছে যেতে নিষেধ করেছেন তার পেছনে এছাড়া আর কোন কারণই নেই যে, পাছে তোমরা ফেরেশতা হয়ে যাও অথবা তোমরা চিরন্তন জীবনের অধিকারী হয়ে পড়ো।” 
২১.) আর সে কসম খেয়ে তাদেরকে বললো, আমি তোমাদের যথার্থ কল্যাণকামী। 
২২.) এভাবে প্রতারণা করে সে তাদের দু'জনকে ধীরে ধীরে নিজের পথে নিয়ে এলো। অবশেষে যখন তারা সেই গাছের ফল আস্বাদন করলো, তাদের লজ্জা স্থান পরস্পরের সামনে খুলে গেলো এবং তারা নিজেদের শরীর ঢাকতে লাগলো জান্নাতের পাতা দিয়ে। তখন তাদের রব তাদেরকে ডেকে বললোঃ “আমি কি তোমাদের এ গাছটির কাছে যেতে নিষেধ করিনি এবং তোমাদের বলিনি যে, শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু?”

২৩.) তারা দু'জন বলে উঠলোঃ “হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের ওপর জুলুম করেছি। এখন যদি তুমি আমাদের ক্ষমা না করো এবং আমাদের প্রতি রহম না করো, তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো।”
২৪.) তিনি বললেনঃ “নেমে যাও, তোমরা পরস্পরের শত্রু এবং তোমাদের জন্য একটি বিশেষ সময় পর্যন্ত পৃথিবীতেই রয়েছে বসবাসের জায়গা ও জীবন যাপনের উপকরণ।”

২৫.) আর বললেনঃ “সেখানেই তোমাদের জীবনযাপন করতে এবং সেখানেই মরতে হবে এবং সেখান থেকেই তোমাদের সবশেষে আবার বের করে আনা হবে।”

সূরা ত্বহাঃ     
১১৫.) আমি এর আগে আদমকে একটি হুকুম দিয়েছিলাম কিন্তু সে ভুলে গিয়েছে এবং আমি তার মধ্যে দৃঢ় সংকল্প পাইনি।
১১৬.) স্মরণ করো সে সময়ের কথা যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম, আদমকে সিজদা করো, তারা সবাই সিজদা করলো কিন্তু একমাত্র ইবলীস অস্বীকার করে বসলো।  
১১৭.) এ ঘটনায় আমি আদমকে বললাম, “দেখো, এ তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু, এমন যেন না হয় যে, এ তোমাদেরকে জান্নাত থেকে বের করে দেয় এবং তোমরা বিপদে পড়ে যাও। 
১১৮.) এখানে তো তুমি এ সুবিধে পাচ্ছো যে, তুমি না অভুক্ত ও উলংগ থাকছো 
১১৯.) এবং না পিপাসার্ত ও রৌদ্রক্লান্ত হচ্ছো।”
১২০.) কিন্তু শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিল, বলতে থাকলো, “হে আদম! তোমাকে কি এমন গাছের কথা বলে দেবো যা থেকে অনন্ত জীবন ও অক্ষয় রাজ্য লাভ করা যায়?”
১২১.) শেষ পর্যন্ত দু’জন (স্বামী-স্ত্রী) সে গাছের ফল খেয়ে বসলো। ফলে তখনই তাদের লজ্জাস্থান পরস্পরের সামনে প্রকাশ হয়ে পড়লো এবং দু’জনাই জান্নাতের পাতা দিয়ে নিজেকে ঢাকতে লাগলো। আদম নিজের রবের নাফরমানী করলো এবং সে সঠিক পথ থেকে সরে গেল।
১২২.) তারপর তার রব তাকে নির্বাচিত করলেন, তার তাওবা কবুল করলেন এবং তাকে পথ নির্দেশনা দান করলেন।
১২৩.) আর বললেন, “তোমরা (উভয় পক্ষ অর্থাৎ মানুষ ও শয়তান) এখান থেকে নেমে যাও, তোমরা পরস্পরের শত্রু থাকবে। এখন যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে কোন নির্দেশনামা পৌঁছে যায় তাহলে যে ব্যক্তি আমার সেই নির্দেশ মেনে চলবে সে বিভ্রান্তও হবে না, দুর্ভাগ্য পীড়িতও হবে না।
১২৪.) আর যে ব্যক্তি আমার “যিকির” (উপদেশমালা) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে তার জন্য হবে দুনিয়ায় সংকীর্ণ জীবন এবং কিয়ামতের দিন আমি তাকে উঠাবো অন্ধ করে।”
১২৫.) -সে বলবে, “হে আমার রব! দুনিয়ায় তো আমি চক্ষুষ্মান ছিলাম কিন্তু এখানে আমাকে অন্ধ করে উঠালে কেন?”
১২৬.) আল্লাহ বলবেন, “হ্যাঁ, এভাবেই তো। আমার আয়াত যখন তোমার কাছে এসেছিল, তুমি তাকে ভুলে গিয়েছিলে এবং সেভাবেই আজ তোমাকেও ভুলে যাওয়া হচ্ছে।”
১২৭.) -এভাবেই আমি সীমালঙ্ঘনকারী এবং নিজের রবের আয়াত অমান্যকারীকে (দুনিয়ায়) প্রতিফল দিয়ে থাকি এবং আখেরাতের আযাব বেশী কঠিন এবং বেশীক্ষণ স্থায়ী।            

সূরা বাকারা
 ৩০) আবার সেই সময়ের কথা একটু স্মরণ কর যখন তোমাদের রব ফেরেশতাদের বলেছিলেন , “আমি পৃথিবীতে একজন খলীফা- প্রতিনিধি নিযুক্ত করতে চাই ৷” তারা বললো , “আপনি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে নিযুক্ত করতে চান যে সেখানকার ব্যবস্থাপনাকে বিপর্যস্থ করবে এবং রক্তপাত করবে? আপনার প্রশংসা ও স্তুতিসহকারে তাসবীহ পাঠ এবং আপনার পবিত্রতা বর্ণনা তো আমরা করেই যাচ্ছি৷ ” আল্লাহ বললেন, “আমি জানি যা তোমরা জানো না ৷ ” 
৩১) অতপর আল্লাহ আদমকে সমস্ত জিনিসের নাম শেখালেন   তারপর সেগুলো পেশ করলেন ফেরেশতাদের সামনে এবং বললেন , “যদি তোমাদের ধারণা সঠিক হয় (অর্থাৎ কোন প্রতিনিধি নিযুক্ত করলে ব্যবস্থাপনা বিপর্যস্ত হবে ) তাহলে একটু বলতো দেখি এই জিনিসগুলোর নাম? ”
৩২) তারা বললোঃ “ত্রুটিমুক্ত তো একমাত্র আপনারই সত্তা, আমরা তো মাত্র ততটুকু জ্ঞান রাখি ততটুকু আপনি আমাদের দিয়েছেন ৷ প্রকৃতপক্ষে আপনি ছাড়া আর এমন কোন সত্তা নেই যিনি সবকিছু জানেন ও সবকিছু বোঝেন ৷”
৩৩) তখন আল্লাহ আদমকে বললেন, “তুমি ওদেরকে এই জিনিসগুলোর নাম বলে দাও ৷”যখন সে তাদেরকে সেসবের নাম জানিয়ে দিল তখন আল্লাহ বললেনঃ “আমি না তোমাদের বলেছিলাম , আমি আকাশ ও পৃথিবীর এমন সমস্ত নিগূঢ় তত্ত্ব জানি যা তোমাদের অগোচরে রয়ে গেছে ? যা কিছু তোমরা প্রকাশ করে থাকো তা আমি জানি এবং যা কিছু তোমরা গোপন করো তাও আমি জানি ৷”
৩৪) তারপর যখন ফেরেশতাদের হুকুম দিলাম , আদমের সামনে নত হও, তখন সবাই অবনত হলো, কিন্তু ইবলিস অস্বীকার করলো ৷ সে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের অহংকারে মেতে উঠলো এবং নাফরমানদের অন্তরভুক্ত হলো ৷
৩৫) তখন আমরা আদমকে বললাম , “তুমি ও তোমার স্ত্রী উভয়েই জান্নাতে থাকো এবং এখানে স্বাচ্ছন্দের সাথে ইচ্ছে মতো খেতে থাকো, তবে এই গাছটির কাছে যেয়ো না ৷  অন্যথায় তোমরা দু’জন যালেমদের অন্তরভুক্ত হয়ে যাবে ৷ ”
৩৬) শেষ পর্যন্ত শয়তান তাদেরকে সেই গাছটির লোভ দেখিয়ে আমার হুকুমের আনুগত্য থেকে সরিয়ে দিল এবং যে অবস্থার মধ্যে তারা ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে ছাড়লো ৷ আমি আদেশ করলাম, “ এখন তোমরা সবাই এখান থেকে নেমে যাও ৷ তোমরা একে অপরের শত্রু৷ তোমাদের একটি নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত পৃথিবীতে অবস্থান করতে ও জীবন অতিবাহিত করতে হবে ৷ ”
৩৭) তখন আদম তার রবের কাছ থেকে কয়েকটি বাক্য শিখে নিয়ে তাওবা করলো ৷ তার রব তার এই তাওবা কবুল করে নিলেন ৷ কারণ তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহকারী ৷
৩৮) আমরা বললাম , “ তোমরা সবাই এখান থেকে নেমে যাও ৷ এরপর যখন আমার পক্ষ থেকে কোন হিদায়াত তোমাদের কাছে পৌছুবে তখন যারা আমার সেই হিদায়াতের অনুসরণ করবে তাদের জন্য থাকবে না কোন ভয় দুঃখ বেদনা ৷
৩৯) আর যারা একে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাবে এবং আমার আয়াতকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেবে তারা হবে আগুনের মধ্যে প্রবেশকারী ৷ সেখানে তারা থাকবে চিরকাল ৷

১৭৪. কোনো জাতিকে গোলাম বানাবার চিরাচরিত কৌশল যা ফেরাউন করেছিল-

প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, ফেরাউন পৃথিবীতে বিদ্রোহ করে এবং তার অধিবাসীদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে দেয়। তাদের মধ্য থেকে একটি দলকে সে লাঞ্ছিত করতো, তাদের ছেলেদের হত্যা করতো এবং মেয়েদের জীবিত রাখতো। আসলে সে বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সূরা আল কাসাস/৪।

Wednesday, May 7, 2014

১৭৩. সালাতে করণীয়

এদেরকে বলে দাও, আল্লাহ‌ বা রহমান যে নামেই ডাকো না কেন, তাঁর জন্য সবই ভাল নাম। আর নিজের সালাত খুব বেশী উচ্চ কণ্ঠেও পড়বে না, বেশী ক্ষীণ কণ্ঠেও না, বরং এ দু’য়ের মাঝামাঝি মধ্যম পর্যায়ের কণ্ঠস্বর অবলম্বন করবে।  আর বলো, সেই আল্লাহর প্রশংসা, যিনি কোন পুত্রও গ্রহণ করেননি। তাঁর বাদশাহীতে কেউ শরীকও হয়নি এবং তিনি এমন অক্ষমও নন যে, কেউ তাঁর সাহায্যকারী ও নির্ভর হবে।” আর তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করো, চূড়ান্ত পর্যায়ের শ্রেষ্ঠত্ব। সূরা বনী ইসরাঈল/১১০-১১১।

১৭২. কুরআন বিশ্বাসীদের বৈশিষ্ট্য

আর এ কুরআনকে আমি সামান্য সামান্য করে নাযিল করেছি, যাতে তুমি থেমে থেমে তা লোকদেরকে শুনিয়ে দাও এবং তাকে আমি (বিভিন্ন সময়) পর্যায়ক্রমে নাযিল করেছি। এদেরকে বলে দাও, তোমরা একে মানো বা না মানো, যাদেরকে এর আগে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাদেরকে যখন এটা শুনানো হয় তখন তারা আনত মস্তকে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এবং বলে ওঠে, “পাক-পবিত্র আমাদের রব, আমাদের রবের প্রতিশ্রুতি তো পূর্ণ হয়েই থাকে।”  এবং তারা নত মুখে কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে এবং তা শুনে তাদের দীনতা আরো বেড়ে যায়। সূরা বনী ইসরাঈল/১০৬-১০৯।

১৭১. ওসীলা খোজা


এরা যাদেরকে ডাকে তারা তো নিজেরাই নিজেদের রবের নৈকট্য লাভের ওসীলা খুঁজে বেড়াচ্ছে যে, কে তাঁর নিকটতর হয়ে যাবে এবং এরা তাঁর রহমতের প্রত্যাশী এবং তাঁর শাস্তির ভয়ে ভীত। আসলে তোমার রবের শাস্তি ভয় করার মতো। সূরা বনী ইসরাঈল/৫৭।

Saturday, May 3, 2014

১৬৯. একমাত্র কিতাব

এক একটি সময়ের জন্য এক একটি কিতাব রয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (দঃ) থেকে শুরু করে কেয়ামত পর্যন্ত একমাত্র কিতাব 'আল কোরয়ান'।

 তোমার আগেও আমি অনেক রসূল পাঠিয়েছি এবং তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান সন্ততি দিয়েছি। আর আল্লাহর অনুমতি ছাড়া নিজেই কোন নিদর্শন এনে দেখাবার শক্তি কোন রসূলেরও ছিল না। প্রত্যেক সময়ের জন্য একটি কিতাব রয়েছে। সূরা আর রাদ/৩৮।

১৬৮. আল্লাহর ওহী ছাড়া কোনো কিছু হারাম করা যাবে না

এদেরকে বলে দাও, যে ওহী আমার কাছে এসেছে তার মধ্যে তো আমি এমন কিছু পাই না যা খাওয়া কারো ওপর হারাম হতে পারে,
তবে মরা, বহমান রক্ত বা শুয়োরের গোশ্‌ত ছাড়া। কারণ তা নাপাক। অথবা যদি অবৈধ হয় আল্লাহ ছাড়া অন্য কারোর নামে যবেহ করার কারণে। তবে অক্ষম অবস্থায় যে ব্যক্তি (তার মধ্য থেকে কোন জিনিস খেয়ে নেবে) নাফরমানীর ইচ্ছা না করে এবং প্রয়োজনের সীমা না পেরিয়ে, সেক্ষেত্রে অবশ্যি তোমার রব ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহকারী। সূরা আল আন'আম/১৪৫।

তাদেরকে বলে দাও, আল্লাহ‌ তাঁর বান্দাদের জন্য যেসব সৌন্দর্য সামগ্রী সৃষ্টি করেছেন, সেগুলো কে হারাম করেছে? আর আল্লাহর দেয়া পবিত্র জিনিসগুলো কে নিষিদ্ধ করেছে? বলো, দুনিয়ার জীবনেও এ সমস্ত জিনিস ঈমানদারদের জন্য, আর কিয়ামতের দিনে এগুলো তো একান্তভাবে তাদেরই জন্য হবে। এভাবে যারা জ্ঞানের অধিকারী তাদের জন্য আমার কথাগুলো আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বর্ণনা করে থাকি।  সূরা আল আরাফ/৩২।

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ‌ তোমাদের জন্য যেসব পবিত্র জিনিস হালাল করেছেন সেগুলো হারাম করে নিয়ো না। আর সীমালংঘন করো না। সীমা-লংঘনকরীদেরকে আল্লাহ‌ ভীষণভাবে অপছন্দ করেন। সূরা আল মায়েদাহ/৮৭।

তাদেরকে বলো, তোমরা কি কখনো একথাও চিন্তা করেছো যে আল্লাহ‌ তোমাদের জন্য যে রিযিক অবতীর্ণ করেছিলেন তার মধ্য থেকে তোমরা নিজেরাই কোনটাকে হারাম ও কোনটাকে হালাল করে নিয়েছো? তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, আল্লাহ‌ কি তোমাদেরকে এর অনুমতি দিয়েছিলেন? নাকি তোমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করছো? সূরা ইউনূস/৫৯।

আর এই যে, তোমাদের কণ্ঠ ভুয়া হুকুম জারী করে বলতে থাকে এটি হালাল এবং ওটি হারাম, এভাবে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করো না। যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে তারা কখনোই সফলকাম হবে না।  সূরা আন নাহল/১১৬।

হে নবী, আল্লাহ‌ যে জিনিস হালাল করেছেন তা তুমি হারাম করছো কেন? (তা কি এজন্য যে, ) তুমি তোমার স্ত্রীদের সন্তুষ্টি চাও? আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং দয়ালু। সূরা আত তাহরীম/১। 

Friday, May 2, 2014

১৬৭. আলেম

 এদের উলামা ও মাশায়েখগণ কেন এদেরকে পাপ কথা বলতে ও হারাম খেতে বাধা দেয় না? অবশ্যি এরা যা করে যাচ্ছে তা অত্যন্ত জঘন্য কার্যক্রম। সূরা আল মায়েদা/৬৩।

১৬৬. আলেম দরবেশদের খোদা বানানো


তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে নিজেদের উলামা ও দরবেশদেরকে নিজেদের খোদায় পরিণত করেছে। এবং এভাবে মারিয়াম পুত্র মসীহকেও। অথচ তাদের মা’বুদ ছাড়া আর কারোর বন্দেগী করার হুকুম দেয়া হয়নি, এমন এক মাবুদ যিনি ছাড়া ইবাদত লাভের যোগ্যতা সম্পন্ন আর কেউ নেই। তারা যেসব মুশরিকী কথা বলে তা থেকে তিনি পাক পবিত্র। সূরা তওবা/৩১।

তাফহীমুল কোরয়ানের ব্যাখ্যাঃ

হাদীসে বলা হয়েছে হযরত আদী ইবনে হাতেম নবী (সা.) এর কাছে এসে ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন খৃস্টান। ইসলাম গ্রহণ করার সময় তিনি নবী (সা.) কে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। এর মধ্যে একটি প্রশ্ন হচ্ছে, কুরআনের এ আয়াতটিতে আমাদের বিরুদ্ধে উলামা ও দরবেশদেরকে খোদা বানিয়ে নেবার যে দোষারূপ করা হয়েছে তার প্রকৃত তাৎপর্য কি? জবাবে তিনি বলেন, তারা যেগুলোকে হারাম বলতো তোমরা সেগুলোকে হারাম বলে মেনে নিতে এবং তারা যেগুলোকে হালাল বলতো তোমরা সেগুলোকে হালাল বলে মেনে নিতে, একথা কি সত্য নয়? জবাবে হযরত আদী বলেন, হাঁ, একথা তো ঠিক, আমরা অবশ্য এমনটি করতাম। রসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, বস, এটিই তো হচ্ছে তোমাদের প্রভু বানিয়ে নেয়া। এ থেকে জানা যায়, আল্লাহর কিতাবের সনদ ছাড়াই যারা মানব জীবনের জন্য জায়েয ও নাজায়েযের সীমানা নির্ধারণ করে তারা আসলে নিজেদের ধারণা মতে নিজেরাই আল্লাহর কর্তৃত্ব ও সার্বভৌমত্বের মর্যাদায় সমাসীন হয়। আর যারা শরীয়াতের বিধি রচনার এ অধিকার তাদের জন্য স্বীকার করে নেয় তারা তাদেরকে কার্যত প্রভুতে পরিণত করে।
কাউকে আল্লাহর পুত্রে পরিণত করা এবং কাউকে শরীয়ত রচনার অধিকার দেয়া সংক্রান্ত অভিযোগ দু’টি পেশ করে প্রমাণ করা হয়েছে যে, তাদের আল্লাহর প্রতি ঈমানের দাবী মিথ্যা। তারা আল্লাহর অস্তিত্ব স্বীকার করলেও তাদের আল্লাহর সম্পর্কিত ধারণা এতই ভ্রান্ত যে, তার কারণে তাদের আল্লাহকে মানা, না মানা সমান হয়ে গেছে।