Wednesday, February 19, 2014

৩৪. ধন-সম্পদ জমা করা


তাদেরকে সে অগ্নিশিখা উচ্চ স্বরে নিজের কাছে ডাকবে, যারা সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিল আর সম্পদ জমা করে ডিমে তা দেয়ার মত করে আগলে রেখেছিল। সূরা আল মা'আরিজ/১৭-১৮
ধবংশ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে (সামনা সামনি) লোকদের ধিক্কার দেয় এবং (পেছনে) নিন্দা করতে অভ্যস্ত। যে অর্থ জমায় এবং তা গুণে গুণে রাখে। সে মনে করে তার অর্থ-সম্পদ চিরকাল থাকবে। কখনো নয়, তাকে তো চূর্ণ-বিচূর্ণকারী জায়গায় ফেলে দেয়া হবে। সূরা হুমাযাহ/১-৪। 

৩৫. অপরাধীরা সেদিন মুক্তির বিনিময়ে তাদের সন্তান-সন্ততি, স্ত্রী, ভাইকে দিয়ে দিতে চাইবে

অথচ তাদেরকে পরস্পরে দৃষ্টি সীমার মধ্যে রাখা হবে। অপরাধী সেদিনের আযাব থেকে মুক্তির বিনিময়ে তার সন্তান-সন্ততিকে, স্ত্রীকে, ভাইকে এবং তাকে আশ্রয়দানকারী জ্ঞাতি-গোষ্ঠীর আপনজনকে এমনকি, পৃথিবীর সবকিছুই দিতে চাইবে। সূরা আল মা'আরিজ/১১-১৪।

৩৬. হাদীস

আল্লাহ‌ সর্বোত্তম হাদীস নাযিল করেছেন, এমন একটি গ্রন্থ যার সমস্ত অংশ সামঞ্জস্যপূর্ণ যার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ের পূনরাবৃত্তি করা হয়েছে। এসব শুনে সে লোকদের লোম শিউরে ওঠে যারা তাদের রবকে ভয় করে। তারপর তাদের দেহমন বিগলিত হয়ে আল্লাহর স্মরণের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এটা হচ্ছে আল্লাহর হিদায়াত। এর দ্বারা তিনি যাকে ইচ্ছা সঠিক পথে নিয়ে আসেন। আর যাকে আল্লাহ‌ নিজেই হিদায়াত দান করেন না তার জন্য কোন হিদায়াতকারী নেই
সূরা যুমার-২৩

 
এটা একজন সম্মানিত রসূলের কথা কোন কবির কাব্য নয়। তোমরা খুব কমই ঈমান পোষণ করে থাকোআর এটা কোন গণকের গণনাও নয়। তোমরা খুব কমই চিন্তা-ভাবনা করে থাকোএ বাণী বিশ্ব-জাহানের রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত যদি এ নবী নিজে কোন কথা বানিয়ে আমার কথা বলে চালিয়ে দিতো তাহলে আমি তার ডান হাত ধরে ফেলতাম এবং ঘাড়ের রগ কেটে দিতামতোমাদের কেউ-ই (আমাকে) এ কাজ থেকে বিরত রাখতে পারতো নাআসলে এটি আল্লাহভীরু লোকদের জন্য একটি নসীহত আমি জানি তোমাদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক লোক মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে থাকবেনিশ্চিতভাবে তা এসব কাফেরদের জন্য অনুতাপ আফসোসের কারণ হবে।  সূরা আল হাক্কাহ/৪০-৫০

এখন কোন হাদীসে তারা এরপর বিশ্বাস স্থাপন করবে?  সূরা আল মুরসালাত-৫০

এগুলো আল্লাহর আয়া, যা আমি তোমাদের সামনে যথাযথভাবে বর্ণনা করছি। আল্লাহ ও তাঁর আয়াত ছাড়া এমন আর কোন হাদীস আছে যার প্রতি এরা ঈমান আনবে?  সূরা আল জাসিয়াহ-৬

তাই হে নবী! এ হাদীস (কোরআন) অস্বীকারকারীদের ব্যাপা আমার ওপর ছেড়ে দাও। আমি ধীরে ধীরে এমনভাবে তাদেরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবো যে, তারা বুঝতেই পারবে না। সূরা আল কলম-৪৪

 আর কিছু লোক আছে, যারা অপ্রয়োজনীয় হাদীসের সওদা করে যাতে লোকদেরকে জ্ঞান (কোরআন) ছাড়াই আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারে এবং পথের আহ্বানকে হাসি-ঠাট্টা করে উড়িয়ে দেয় এ ধরনের লোকদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাবসূরা লোকমান-৬

আল্লাহ তিনিই যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি তোমাদের সবাইকে সেই কিয়ামতের দিন একত্র করবেন, যার আসার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। আর আল্লাহর হাদীসের চাইতে বেশী সত্য আর কার হাদীস হতে পারে? সূরা নিসা-৮৭

তাহলে কি এসব হাদীস (কোরআন) শুনেই তোমরা বিস্ময় প্রকাশ করছো? সূরা আন নজম/৫৯।
 
তাদের একথার ব্যাপারে তারা যদি সত্যবাদী হয় তাহলে এ হাদীসের (কোরআন) মত একটি হাদীস তৈরি করে আনুক। সূরা আত তুর/৩৪।


আল কুরআন মানুষের বানানো হাদিস নয়
============================
পূর্ববর্তী লোকদের এ কাহিনীর মধ্যে
বুদ্ধি ও বিবেচনা সম্পন্ন লোকদের জন্য শিক্ষা রয়েছে। 
কুরআনে এ যা কিছু বর্ণনা করা হচ্ছে
এগুলো বানোয়াট হাদিস নয়
বরং এগুলো ইতিপূর্বে এসে যাওয়া
কিতাবগুলোতে বর্ণিত সত্যের সমর্থন
এবং সবকিছুর বিশদ বিবরণ।
আর যারা একে বিশ্বাস করে
এটি তাদের পরিচালক
এবং আলাহর পক্ষ থেকে একটি বিশেষ করুণা।
সূরা ইউনূসঃ ১১১

৩৭. সাফায়াত বা সুপারিশ

(হে মুহাম্মাদ! এদেরকে সেই দিন সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে দাও) যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে একজন সাক্ষী দাঁড় করিয়ে দেবো, যে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে এবং এদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবার জন্য আমি তোমাকে নিয়ে আসবো। (আর এ সাক্ষ্যের প্রস্তুতি হিসেবে) আমি এ কিতাব তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যা সব কিছু বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করে এবং যা সঠিক পথনির্দেশনা, রহমত ও সুসংবাদ বহন করে তাদের জন্য যারা আনুগত্যের শির নত করে দিয়েছে। সূরা আন নাহল/৮৯।

আর ভয় করো সেই দিনকে যেদিন কেউ কারো সামান্যতমও কাজে লাগবে না, কারো পক্ষ থেকে সুপারিশ গৃহীত হবে না, বিনিময় নিয়ে কাউকে ছেড়ে দেয়া হবে না এবং অপরাধীরা কোথাও থেকে সাহায্য লাভ করতে পারবে না। সূরা বাকারা-৪৮

এ লোকেরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ইবাদত করছে তারা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না, উপকারও করতে পারে না। আর তারা বলে এরা আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশকারী। হে মুহাম্মাদ! ওদেরকে বলে দাও, “তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ের খবর দিচ্ছো যার অস্তিত্বের কথা তিনি আকাশেও জানেন না এবং যমিনেও না!” তারা যে শিরক্ করে তা থেকে তিনি পাক-পবিত্র এবং তার উর্ধ্বে। ১০/১৮

বলো, সুপারিশ সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর ইখতিয়ারাধীন। আসমান ও যমীনের বাদশাহীর মালিক তিনিই। তোমাদেরকে তাঁরই দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। ৩৯/৪৪

আল্লাহ এমন এক চিরঞ্জীব ও চিরন্তন সত্তা যিনি সমগ্র বিশ্ব-জাহানের দায়িত্বভার বহন করছেন, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি ঘুমান না এবং তন্দ্রাও তাঁকে স্পর্শ করে না। পৃথিবী ও আকাশে যা কিছু আছে সবই তাঁর। কে আছে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? যা কিছু মানুষের সামনে আছে তা তিনি জানেন এবং যা কিছু তাদের অগোচরে আছে সে সম্পর্কেও তিনি অবগত। তিনি নিজে যে জিনিসের জ্ঞান মানুষকে দিতে চান সেটুকু ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ব করতে পারে না। তাঁর কর্তৃত্ব আকাশ ও পৃথিবী ব্যাপী। এগুলোর রক্ষণাবেক্ষন তাঁকে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত করে না। মূলত তিনিই এক মহান ও শ্রেষ্ঠ সত্তা। ২/২৫৫

সেই পরম করুণাময় আল্লাহর পক্ষ থেকে যিনি পৃথিবী ও আকাশসমূহের এবং তাদের মধ্যবর্তী প্রত্যেকটি জিনিসের মালিক, যার সামনে কারো কথা বলার শক্তি থাকবে না। যেদিন রূহ ও ফেরেশতারা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে। পরম করুণাময় যাকে অনুমতি দেবেন এবং যে ঠিক কথা বলবে, সে ছাড়া আর কেউ কথা বলবে না। ৭৮/৩৭-৩৮

আল্লাহই আকাশ মণ্ডলী ও পৃথিবী এবং এদের মাঝখানে যা কিছু আছে সব সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে এবং এরপর আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি ছাড়া তোমাদের কোন সাহায্যকারী নেই এবং নেই তার সামনে সুপারিশকারী, তারপরও কি তোমরা সচেতন হবে না? ৩২/৪

মৃত্যর সময় আল্লাহই রূহসমূহ কবজ করেন আর যে এখনো মরেনি নিদ্রাবস্থায় তার রূহ কবজ করেন। অতঃপর যার মৃত্যুর ফায়সালা কার্যকরী হয় তাকে রেখে দেন এবং অন্যদের রূহ একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফেরত পাঠান। যারা চিন্তা-ভাবনা করে তাদের জন্য এর মধ্যে বড় নিদর্শন রয়েছে।
এসব লোক কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে সুপারিশকারী বানিয়ে রেখেছে? তাদেরকে বলো, তাদের ক্ষমতা ও ইখতিয়ারে যদি কিছু না থাকে এবং তারা কিছু না বুঝে এমতাবস্থায়ও কি সুপারিশ করবে? বলো, সুপারিশ সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর ইখতিয়ারাধীন।
আসমান ও যমীনের বাদশাহীর মালিক তিনিই। তোমাদেরকে তাঁরই দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। যখন শুধু আল্লাহর কথা বলা হয়, তখন যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তাদের মন কষ্ট অনুভব করে। আর যখন তাকে বাদ দিয়ে অন্যদের কথা বলা হয় তখন তারা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে।
সূরা আয যুমার/৪২-৪৫।

৩৮. কিতাব

এটি সেই কিতাব, যার মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। এটি হিদায়াত তাদের জন্য যারা আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেক বেঁচে থাকতে চায়। ২/২

আর যে কিতাব তোমাদের ওপর নাযিল করা হয়েছে (অর্থাৎ কুরআন) এবং তোমার আগে যেসব কিতাব নাযিল করা হয়েছিল সে সবগুলোর ওপর ঈমান আনে আর আখেরাতের ওপর একীন রাখে। ২/৪

আর যে কিতাবটি আমি আমার বান্দার ওপর নাযিল করেছি সেটি আমার কিনা- এ ব্যাপারে যদি তোমরা সন্দেহ পোষণ করে থাকো তাহলে তার মতো একটি সূরা তৈরি করে আনো এবং নিজেদের সমস্ত সমর্থক গোষ্ঠীকে ডেকে আনো – এক আল্লাহকে ছাড়া আর যার যার চাও তার সাহায্য নাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে এ কাজটি করে দেখাও। কিন্তু যদি তোমরা এমনটি না করো আর নিঃসন্দেহে কখনই তোমরা এটা করতে পারবে না, তাহলে ভয় করো সেই আগুনকে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যা তৈরি রাখা হয়েছে সত্য অস্বীকারকারীদের জন্য।  আর হে নবী, যারা এ কিতাবের ওপর ঈমান আনবে এবং (এর বিধান অনুযায়ী) নিজেদের কার্যধারা সংশোধন করে নেবে তাদেরকে এ মর্মে সুখবর দাও যে, তাদের জন্য এমন সব বাগান আছে যার নিম্নদেশ দিয়ে প্রবাহিত হবে ঝর্ণাধারা। সেই বাগানের ফল দেখতে দুনিয়ার ফলের মতই হবে। যখন কোন ফল তাদের দেয়া হবে খাবার জন্য, তারা বলে উঠবেঃ এ ধরনের ফলই ইতিপূর্বে দুনিয়ায় আমাদের দেয়া হতো। সেখানে থাকবে পাক-পবিত্র দম্পতিগণ এবং তারা সেখানে থাকবে চিরকাল।  ২/২৩-২৫

আমরা বললাম, “তোমরা সবাই এখান থেকে নেমে যাও। এরপর যখন আমার পক্ষ থেকে কোন হিদায়াত তোমাদের কাছে পৌঁছুবে তখন যারা আমার সেই হিদায়াতের অনুসরণ করবে তাদের জন্য থাকবে না কোন ভয় দুঃখ বেদনা। আর যারা একে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাবে এবং আমার আয়াতকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেবে তারা হবে আগুনের মধ্যে প্রবেশকারী। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।” ২/৩৮-৩৯

৩৯. বর্তমান ইসলামী আন্দোলনের যেন বাস্তব চিত্র

হে নবী! তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা এই মর্মে দাবী করে চলেছে যে, তারা ঈমান এনেছে সেই কিতাবের প্রতি যা তোমার ওপর নাযিল করা হয়েছে এবং সেই সব কিতাবের প্রতি যেগুলো তোমরা পূর্বে নাযিল করা হয়েছিল কিন্তু তারা নিজেদের বিষয়সমূহ ফায়সালা করার জন্য ‘তাগুতে’র দিকে ফিরতে চায়, অথচ তাদেরকে তাগুতকে অস্বীকার করার হুকুম দেয়া হয়েছিল? শয়তান তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে সরল সোজা পথ থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়ে যেতে চায়।  আর যখন তাদেরকে বলা হয়, এসো সেই জিনিসের দিকে, যা আল্লাহ নাযিল করেছেন এবং এসো রসূলের দিকে, তখন তোমরা দেখতে পাও ঐ মুনাফিকরা তোমাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে।

তারপর তখন তাদের কী অবস্থা হয় যখন তাদের কৃতকর্মের ফল স্বরূপ তাদের ওপর কোন বিপদ এসে পড়ে? তখন তারা কসম খেতে খেতে তোমার কাছে আসে এবং বলতে থাকেঃ আল্লাহর কসম, আমরা তো কেবল মঙ্গল চেয়েছিলাম এবং উভয় পক্ষের মধ্যে কোনো প্রকারে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাক, এটিই ছিল আমাদের বাসনা। আল কোরআনঃ ৪/৬০-৬২

৪০. রাসূল (দঃ) এর পরিচয়

এদের বলো, ‘আমি কোন অভিনব রসূল নই। কাল তোমাদের সাথে কী আচরণ করা হবে এবং আমার সাথেই বা কী আচরণ করা হবে তা আমি জানি না। আমি তো কেবল সেই অহীর অনুসরণ করি যা আমার কাছে পাঠানো হয় এবং আমি সুস্পষ্ট সাবধানকারী ছাড়া আর কিছুই নই। ৪৬/৯

হে মুহাম্মাদ! তাদেরকে বলো, “আমি তোমাদের একথা বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধনভাণ্ডার আছে, আমি গায়েবের জ্ঞানও রাখি না এবং তোমাদের একথাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো কেবলমাত্র সে অহীর অনুসরণ করি, যা আমার প্রতি নাযিল করা হয়।” তারপর তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা-ভাবনা করো না? ৬/৫০

হে মুহাম্মাদ! তাদেরকে বলো, নিজের জন্য লাভ-ক্ষতির কোন ইখতিয়ার আমার নেই। একমাত্র আল্লাহই যা কিছু চান তাই হয়। আর যদি আমি গায়েবের খবর জানতাম, তাহলে নিজের জন্য অনেক ফায়দা হাসিল করতে পারতাম এবং কখনো আমার কোন ক্ষতি হতো না। আমি তো যারা আমার কথা মেনে নেয় তাদের জন্য নিছক একজন সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা মাত্র।” ৭/১৮৮

হে মুহাম্মাদ! বলো, আমি তো একজন মানুষ তোমাদেরই মতো, আমার প্রতি অহী করা হয় এ মর্মে যে, এক আল্লাহ‌ তোমাদের ইলাহ, কাজেই যে তার রবের সাক্ষাতের প্রত্যাশী তার সৎকাজ করা উচিত এবং বন্দেগীর ক্ষেত্রে নিজের রবের সাথে কাউকে শরীক করা উচিত নয়। ১৮/১১০

তোমাদের রব তোমাদের অবস্থা সম্পর্কে বেশী জানেন। তিনি চাইলে তোমাদের প্রতি দয়া করেন এবং চাইলে তোমাদের শাস্তি দেন। আর হে নবী! আমি তোমাকে লোকদের ওপর হাবিলদার করে পাঠাইনি। ১৭/৫৪

মুহাম্মাদ একজন রসূল বৈ তো আর কিছুই নয়। তার আগে আরো অনেক রসূলও চলে গেছে। যদি সে মারা যায় বা নিহত হয়, তাহলে তোমরা কি পেছনের দিকে ফিরে যাবে? মনে রেখো, যে পেছনের দিকে ফিরে যাবে সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করবে না, তবে যারা আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হয়ে থাকবে তাদেরকে তিনি পুরস্কৃত করবেন। ৩/১৪৪

মুহাম্মাদ তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে কারোর পিতা নয় কিন্তু সে আল্লাহর রসূল এবং শেষ নবী আর আল্লাহ‌ সব জিনিসের জ্ঞান রাখেন। ৩৩/৪০

এভাবেই (হে মুহাম্মাদ) , আমি আমার নির্দেশে তোমার কাছে এক রূহকে অহী করেছি। তুমি আদৌ জানতে না কিতাব কি এবং ঈমানই বা কি। কিন্তু সেই রূহকে আমি একটি আলো বানিয়ে দিয়েছি যা দিয়ে আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা পথ দেখিয়ে থাকি। নিশ্চিতভাবেই আমি তোমাকে সোজা পথের দিক নির্দেশনা দান করছি। ৪২/৫২

[হে নবী (সা)] তোমাকেও মরতে হবে এবং এসব লোককেও মরতে হবে। সূরা জুমার/৩০

৪১. কবি ও কবিতা

হে লোকেরা! আমি তোমাদের জানাবো শয়তানরা কার ওপর অবতীর্ণ হয়? তারা তো প্রত্যেক জালিয়াত বদকারের উপর অবতীর্ণ হয়। শোনা কথা কানে ঢুকিয়ে দেয় এবং এর বেশির ভাগই হয় মিথ্যা। আর কবিরা! তাদের পেছনে চলে পথভ্রান্ত যারা। তুমি কি দেখো না তারা উপত্যকায় উপত্যকায় উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ায় এবং এমনসব কথা বলে যা তারা করে না? তারা ছাড়া যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরন করে আর তাদের প্রতি জুলুম করা হলে শুধুমাত্র প্রতিশোধ নেয়। আর জুলুমকারীরা শীঘ্রই জানবে তাদের পরিণাম কি!
আল কোরআনঃ ২৬/২২১-২২৭
আমি এ (নবী)-কে কবিতা শিখাইনি এবং কাব্য চর্চা তার জন্য শোভনীয়ও নয়। এ তো একটি উপদেশ এবং পরিষ্কার পঠনযোগ্য কিতাব। ৩৬/৬৯

৪২. দুনিয়াপুজারী ব্যক্তির উদাহরন কুকুরের মতো যে কোরআনের অনুসরন করতে সক্ষম হবে না

আমি চাইলে ঐ আয়াতগুলোর সাহায্যে তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করতাম কিন্তু সে তো দুনিয়ার প্রতিই ঝুঁকে রইল এবং নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করলো। কাজেই তার অবস্থা হয়ে গেল কুকুরের মত, তার ওপর আক্রমণ করলেও সে জিভ ঝুলিয়ে রাখে আর আক্রমণ না করলেও জিভ ঝুলিয়ে রাখেযারা আমার আয়াতকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে তাদের দৃষ্টান্ত এটাই। তুমি এ কাহিনী তাদেরকে শুনাতে থাকো, হয়তো তারা কিছু চিন্তা-ভাবনা করবেসূরা আরাফ/১৭৬

৪৩. শয়তান তোমাদের দারিদ্রের ভয় দেখায়

শয়তান তোমাদের দারিদ্রের ভয় দেখায় এবং অশ্লীল কাজ করতে আদেশ করে কিন্তু আল্লাহ‌ তোমাদেরকে তাঁর ক্ষমা ও অনুগ্রহের আশ্বাস দেন। আল্লাহ‌ বড়ই উদারহস্ত ও মহাজ্ঞানী  সূরা বাকারা-২৬৮

৪৪. অজু, গোসল, তায়াম্মুম

হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা প্রার্থনার জন্য তৈরী হও, তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত দু’টি কনুই পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো, মাথার ওপর হাত বুলাও এবং পা দু’টি গোড়ালী পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো যদি তোমরা ‘জানাবাত’ অবস্থায় থাকো, তাহলে গোসল করে পাক সাফ হয়ে যাও। যদি তোমরা রোগগ্রস্ত হও বা সফরে থাকো অথবা তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি মলমূত্র ত্যাগ করে আসে বা তোমরা নারীদেরকে স্পর্শ করে থাকো এবং পানি না পাও, তাহলে পাক-পবিত্র মাটি দিয়ে কাজ সেরে নাও। তার ওপর হাত রেখে নিজের চেহারা ও হাতের ওপর মসেহ করে নাও। আল্লাহ তোমাদের জন্য জীবনকে সংকীর্ণ করে দিতে চান না কিন্তু তিনি চান তোমাদেরকে পাক-পবিত্র করতে এবং তাঁর নিয়ামত তোমাদের ওপর সম্পূর্ণ করে দিতে, হয়তো তোমরা শোকর গুজার হবে। আল মায়েদাহ-৬

৪৫. সালাত বা প্রার্থনা

প্রার্থনা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যঃ
আমিই আল্লাহ,
আমি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই,
কাজেই তুমি আমার দাসত্ব করো
এবং আমাকে স্মরণ করার জন্য প্রার্থনা প্রতিষ্ঠিত করো।
(সূরা ত্বহা/১৪।)


প্রার্থনা প্রতিষ্ঠার সময়ঃ
প্রার্থনা প্রতিষ্ঠা করো দিনের দু’প্রান্তে
এবং রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হওয়া পর্যন্ত।
আসলে সৎকাজ অসৎকাজকে দূর করে দেয়।
এটি একটি স্মারক তাদের জন্য যারা আল্লাহকে স্মরণ রাখে।
(সূরা হুদ/১১৪।)

প্রার্থনা প্রতিষ্ঠা করো
সূর্য ঢলে পড়ার পর থেকে নিয়ে
রাতের অন্ধকার পর্যন্ত
এবং ভোরবেলায় কুরআন পড়ারও ব্যবস্থা করো।
কারণ ভোরের কুরআন পাঠ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।
(সূরা বনী ইসরাঈল/৭৮।)

হে বিশ্বাসীগণ!
তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসী
এবং তোমাদের এমন সব সন্তান
যারা এখনো বুদ্ধির সীমানায় পৌঁছেনি,
তাদের অবশ্যি তিনটি সময়ে অনুমতি নিয়ে
তোমাদের কাছে আসা উচিতঃ
ভোরের প্রার্থনার আগে,
দুপুরে যখন তোমরা পোশাক ছেড়ে রেখে দাও
এবং সন্ধ্যার প্রার্থনার পর।
এ তিনটি তোমাদের গোপনীয়তার সময়।
এরপরে তারা বিনা অনুমতিতে এলে
তোমাদের কোন পাপ নেই এবং তাদেরও না।
তোমাদের পরস্পরের কাছে বারবার আসতেই হয়।
এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য
নিজের বাণী সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন
এবং তিনি সবকিছু জানেন ও বিজ্ঞ।
(সূরা আন নূর/৫৮।)

প্রার্থনার কোরআনিক উদাহরণ ও নির্দেশনাঃ
হে বিশ্বাসীগণ!
যখন তোমরা প্রার্থনার জন্য তৈরী হও,
তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত দু’টি
কনুই পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো,
মাথার ওপর হাত বুলাও
এবং পা দু’টিও গোড়ালী পর্যন্ত।
যদি তোমরা অপরিচ্ছন্ন থাক , তাহলে পরিচ্ছন্ন হয়ে নাও।
যদি তোমরা রোগগ্রস্ত হও বা সফরে থাকো
অথবা তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি মলমূত্র ত্যাগ করে আসে
বা নারী সম্ভোগ করে থাকো এবং পানি না পাও,
তাহলে পরিচ্ছন্ন মাটি দিয়ে কাজ সেরে নাও।
তার ওপর হাত রেখে নিজের চেহারা ও হাতের ওপর মুছে নাও।
আল্লাহ তোমাদের জন্য জীবনকে সংকীর্ণ করে দিতে চান না
কিন্তু তিনি চান তোমাদেরকে পরিচ্ছন্ন করতে
এবং তাঁর অনুগ্রহ তোমাদের ওপর সম্পূর্ণ করে দিতে,
হয়তো তোমরা কৃতজ্ঞ হবে।
(সূরা আল মায়েদাহ-৬।)

হে বিশ্বাসীগণ!
তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রার্থনা করো না।
প্রার্থনা তখন করা উচিত
যখন তোমরা যা বলছো তা বুঝতে পারো।
অনুরূপভাবে অপরিচ্ছন্ন অবস্থায়ও
যতক্ষন না তা ধূয়ে পরিস্কার করে নাও।
তবে যদি ভ্রমনরত থাকো, তাহলে ভিন্ন কথা।
আর যদি কখনো তোমরা অসুস্থ হয়ে পড়ো, সফরে থাকো
বা তোমাদের কেউ মলমূত্র ত্যাগ করে আসে
অথবা তোমরা নারী সম্ভোগ করে থাকো
এবং এরপর পানি না পাও,
তাহলে পাক–পবিত্র মাটির সাহায্য গ্রহণ করো
এবং তা নিজেদের চেহারা ও হাতের ওপর বুলাও।
নিঃসন্দেহে আল্লাহ‌ কোমলতা অবলম্বনকারী ও ক্ষমাশীল।
(সূরা নিসা/৪৩।)

আর যখন তোমরা ভ্রমনরত থাকো
তখন প্রার্থনা সংক্ষেপ করে নিলে কোন ক্ষতি নেই।
(বিশেষ করে) যখন তোমাদের আশঙ্কা হয় যে,
অবিশ্বাসীরা তোমাদেরকে কষ্ট দেবে।
কারণ তারা প্রকাশ্যে তোমাদের শত্রুতা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
যখন তুমি তাদের মধ্যে থাকো
তখন তাদেরকে নিয়ে প্রার্থনায় দাঁড়াও।
তখন তাদের মধ্য থেকে একটি দলের
তোমার সাথে দাঁড়িয়ে যাওয়া উচিত এবং তারা অস্ত্রসস্ত্র সঙ্গে নেবে।
তারপর তারা আল্লাহর সামনে মস্তক অবনমিত করবে ও পেছনে চলে যাবে
এবং দ্বিতীয় দলটি, যারা এখনো প্রার্থনা করেনি,
তারা এসে তোমার সাথে প্রার্থনা করবে।
আর তারাও সতর্ক থাকবে এবং নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র বহন করবে।
কারণ অবিশ্বাসীরা সুযোগের অপেক্ষায় আছে,
তোমরা নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র ও জিনিস পত্রের দিক থেকে সামান্য গাফেল হলেই
তারা তোমাদের ওপর অকস্মাৎ ঝাঁপিয়ে পড়বে।
তবে যদি তোমরা বৃষ্টির কারণে কষ্ট অনুভব করো অথবা অসুস্থ থাকো,
তাহলে অস্ত্র রেখে দিলে কোন ক্ষতি নেই।
কিন্তু তবুও সতর্ক থাকো।
নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো,
আল্লাহ‌ অবিশ্বাসীদের জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। 
তারপর তোমরা প্রার্থনা শেষ করার পর
দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে সব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো।
আর মানসিক প্রশান্তি লাভ করার পর
(জীবনের সকল ক্ষেত্রে) প্রার্থনা প্রতিষ্ঠিত করো।
আসলে নির্ধারিত সময়ে প্রার্থনা বিশ্বাসীদের জন্য লিখে দেয়া হয়েছে।
(সূরা নিসা /১০১-১০৩)

তোমাদের প্রার্থনাসমূহের সংরক্ষণ করো,
বিশেষ করে এমন প্রার্থনা
যা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরীর মাধ্যম।
আল্লাহর সামনে এমনভাবে দাঁড়াও
যেমন অনুগত সেবকরা দাঁড়ায়।
(সূরা আল বাকারাহ/২৩৮)

যারাঃ নিজেদের প্রার্থনায় বিনয়াবনত থাকে।
(সূরা আল মুমিনুন/২)

এবং নিজেদের প্রার্থনাসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ করে।
(সূরা আল মুমিনুন/৯)

এদেরকে বলে দাও,
আল্লাহ‌ বা দয়াময় যে নামেই ডাকো না কেন,
তাঁর জন্য সবই ভাল নাম।
আর নিজের প্রার্থনা খুব বেশী উচ্চ কণ্ঠেও করবে না,
বেশী ক্ষীণ কণ্ঠেও না,
বরং এ দু’য়ের মাঝামাঝি মধ্যম পর্যায়ের কণ্ঠস্বর অবলম্বন করবে।
আর বলো,
সেই আল্লাহর প্রশংসা,
যিনি কোন পুত্রও গ্রহণ করেননি।
তাঁর বাদশাহীতে কেউ অংশীদারও হয়নি
এবং তিনি এমন অক্ষমও নন যে,
কেউ তাঁর সাহায্যকারী ও নির্ভরতা হবে।”
আর তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করো,
চূড়ান্ত পর্যায়ের শ্রেষ্ঠত্ব।
(সূরা বনী ইসরাঈল-১১০।)

এ অবস্থা দেখে
যাকারিয়া তার প্রভূর কাছে প্রার্থনা করলোঃ
“প্রভূ! তোমরা বিশেষ ক্ষমতা বলে আমাকে সৎ সন্তান দান করো।
তুমিই প্রার্থনা শ্রবণকারী।”
যখন তিনি মেহরাবে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করছিলেন
তখন এর জবাবে তাকে মালাইকাগণ বললোঃ
“আল্লাহ্‌ তোমাকে ইয়াহইয়ার সুসংবাদ দান করেছেন।
সে আল্লাহ‌র পক্ষ থেকে একটি আদেশের সত্যতা প্রমাণকারী হিসেবে আসবে।
তার মধ্যে নেতৃত্ব ও সততার গুণাবলী থাকবে।
সে পরিপূর্ণ সংযমী হবে, আল্লাহর বানী বলবে
এবং সৎকর্মশীলদের মধ্যে গণ্য হবে।”
(সূরা আলে ইমরান ৩৮-৩৯)

তুমি কি দেখনা!
আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করেছে
যারা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে আছে তারা সবাই
এবং যে পাখিরা ডানা বিস্তার করে আকাশে ওড়ে।
প্রত্যেকেই জানে তার প্রার্থনা ও পবিত্রতা বর্ণনা করার পদ্ধতি।
আর এরা যা কিছু করে আল্লাহ তা জানেন।
(সূরা আন নূর, ৪১)


প্রকৃত প্রার্থনাকারীদের বৈশিষ্ট্যঃ

তবে যারা প্রার্থনাকারী।
তারা তাদের প্রার্থনায় অবিচল থাকে।
তাদের সম্পদে নির্দিষ্ট অধিকার আছে প্রার্থী ও বঞ্চিতদের।
তারা প্রতিফলের দিনটিকে সত্য বলে মানে।
তারা তাদের লালন পালনকারীর শাস্তিকে ভয় করে।
কারণ তাদের লালন পালনকারীর শাস্তি এমন বস্তু নয়
যা সম্পর্কে নির্ভয় থাকা যায়।
তারা নিজেদের লজ্জাস্থান
নিজের স্ত্রী অথবা মালিকানাধীন স্ত্রীলোকদের ছাড়া
অন্যদের থেকে রক্ষা করে।
স্ত্রী ও মালিকানাধীন স্ত্রীলোকদের ক্ষেত্রে তারা তিরস্কৃত হবে না।
তবে যারা এর বাইরে আর কেউকে চাইবে
তারা সীমালংঘনকারী।
যারা আমানত রক্ষা করে ও প্রতিশ্রুতি পালন করে।
আর তারা সাক্ষ্য দানের ক্ষেত্রে সততার ওপর অটল থাকে।
তারা প্রার্থনার রক্ষনাবেক্ষণ করে।
এসব লোক সম্মানের সাথে বাগানসমূহে অবস্থান করবে।
(সূরা আল মা'আরিজ/২২-৩৫)

কিতাব থেকে তোমার প্রতি যা অহি করা হয়
তা পাঠ করো এবং প্রার্থনা প্রতিষ্ঠা করো,  নিশ্চিতভাবেই প্রার্থনা অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।
আর আল্লাহর স্মরণ এর চাইতেও বড় জিনিস। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কিছু করো।
(সূরা আল আনকাবুত/৪৫)

দু'মুখো লোকদের প্রার্থনাঃএই দু'মুখো লোকেরা আল্লাহর সাথে ধোঁকাবাজি করছে।
অথচ আল্লাহই তাদেরকে ধোঁকার মধ্যে ফেলে রেখে দিয়েছেন।
তারা যখন প্রার্থনার জন্য ওঠে,
আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে শৈথিল্য সহকারে
নিছক লোক দেখাবার জন্য ওঠে
এবং আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করে।
(সূরা নিসা, ১৪২)

তাদের দেয়া সম্পদ গৃহীত না হবার
এছাড়া আর কোন কারণ নেই যে,
তারা আল্লাহ‌ ও তাঁর বার্তাবাহককে অস্বীকার করেছে,
প্রার্থনার জন্য যখন আসে আড়মোড় ভাংতে ভাংতে আসে
এবং আল্লাহর পথে খরচ করলে তা করে অনিচ্ছাকৃত ভাবে।
(সূরা তওবা/৫৪)

নবীদের পরই প্রার্থনা বিকৃত করা হয়েছেঃ
 তারপর এদের পর এমন নালায়েক লোকেরা এদের স্থলাভিষিক্ত হলো
যারা প্রার্থনাকে বিকৃত করলো এবং প্রবৃত্তির কামনার দাসত্ব করলো। তাই শীঘ্রই তারা বিভ্রান্তির মুখোমুখি হবে। (সূরা মারয়াম, ৫৯)

প্রার্থনা না করার পরিনামঃ
 সেখানে তারা অপরাধীদের জিজ্ঞেস করতে থাকবে
কিসে তোমাদের দোযখে নিক্ষেপ করলো।  
তারা বলবেঃ আমরা প্রার্থনাকারী ছিলাম না
অভাবীদের খাবার দিতাম না।
সত্যের বিরুদ্ধে অপবাদ রটনাকারীদের সাথে মিলে আমরাও রটনা করতাম;
প্রতিফল দিবস মিথ্যা মনে করতাম।
শেষ পর্যন্ত আমরা সে নিশ্চিত জিনিসের মুখোমুখি হয়েছি।
(সূরা আল মুদ্দাসসির, ৪৩-৪৭)সেদিন কিছু সংখ্যক চেহারা তরতাজা থাকবে।
নিজের রবের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখবে।
আর কিছু সংখ্যক চেহারা থাকবে উদাস-বিবর্ণ।
মনে করতে থাকবে যে,
তাদের সাথে কঠোর আচরণ করা হবে।  
কখ্খনো না,যখন প্রাণ কণ্ঠনালীতে উপনীত হবে
এবং বলা হবে, ঝাঁড় ফুঁক করার কেউ আছে কি?
মানুষ বুঝে নেবে এটা বিদায় নেয়ার সময়।
উভয় পায়ের গোছা বা নলা একত্র হয়ে যাবে। 
সেদিনটি হবে তোমার প্রভুর কাছে যাত্রা করার দিন।  
অথচ সে সত্যকে অনুসরণও করেনি।  
প্রার্থনাও করেনি
বরং সে অস্বীকার করেছে ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।  
তারপর গর্বিত ভঙ্গিতে
নিজের পরিবার পরিজনের কাছে ফিরে গিয়েছে।
(সূরা আল কিয়ামাহ/২২-৩৩)

তারপর সেই প্রার্থনাকারীদের জন্য ধ্বংস
যারা নিজেদের প্রার্থনার ব্যাপারে উদাসীন। 
যারা লোক দেখানো কাজ করে।
(সূরা আল মাউন/৪-৬)