Wednesday, January 22, 2014

৯৯. মূসা (আঃ) এর সংগীদের অবস্থা

মূসার অনুপস্থিতিতে তার জাতির লোকেরা নিজেদের অলংকার দিয়ে বাছুরের মূর্তি তৈরী করলো। তার মুখ দিয়ে গরুর মত 'হাম্বা' রব বের হতো। তারা কি দেখতে পেতো না যে, ঐ বাছুর তাদের সাথে কথাও বলে না আর কোন ব্যাপারে তাদেরকে পথনির্দেশনাও দেয় না? কিন্তু এরপরও তাকে মাবুদে পরিণত করলো। বস্তুত তারা ছিল বড়ই জালেম।
তারপর যখন তাদের প্রতারণার জাল ছিন্ন হয়ে গেলো এবং তারা দেখতে পেলো যে, আসলে তারা পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে তখন বলতে লাগলোঃ “যদি আমাদের রব আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন এবং আমাদের ক্ষমা না করেন, তাহলে আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো।”
ওদিকে মূসা ফিরে এলেন তার জাতির কাছে ক্রুদ্ধ ও ক্ষুব্ধ অবস্থায়। এসেই বললেনঃ “আমার অনুপস্থিতিতে তোমরা আমার বড়ই নিকৃষ্ট প্রতিনিধিত্ব করেছো! তোমরা কি নিজেদের রবের হুকুমের অপেক্ষা করার মত এতটুকু সবরও করতে পারলে না?” সে ফলকগুলো ছুঁড়ে দিল এবং নিজের ভাইয়ের (হারুন) মাথার চুল ধরে টেনে আনলো। হারুন বললোঃ “হে আমার সহোদর! এ লোকগুলো আমাকে দুর্বল করে ফেলেছিল এবং আমাকে হত্যা করার উপক্রম করেছিল। কাজেই তুমি শত্রুর কাছে আমাকে হাস্যাম্পদ করো না এবং আমাকে এ জালেম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করো না। তখন মূসা বললোঃ “হে আমার রব! আমাকে ও আমার ভাইকে ক্ষমা করো এবং তোমার অনুগ্রহের মধ্যে আমাদের দাখিল করে নাও, তুমি সবচাইতে বেশী অনুগ্রহকারী।” (জওয়াবে বলা হলো) “যারা বাছুরকে মাবুদ বানিয়েছে তারা নিশ্চয়ই নিজেদের রবের ক্রোধের শিকার হবেই এবং দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছিত হবে। মিথ্যা রচনাকারীদেরকে আমি এমনি ধরনের শাস্তিই দিয়ে থাকি। আর যারা খারাপ কাজ করে তারপর তাওবা করে নেয় এবং ঈমান আনে, এক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে এ তাওবা ও ঈমানের পর তোমার রব ক্ষমাশীল ও করুণাময়। তারপর মূসার ক্রোধ প্রশমিত হলে সে ফলকগুলি উঠিয়ে নিল। যারা নিজেদের রবকে ভয় করে তাদের জন্য ঐ সব ফলকে ছিল পথনির্দেশ ও রহমত। আর মূসা (তার সাথে) আমার নির্ধারিত সময়ে হাযির হবার জন্য নিজের জাতির সত্তর জন লোককে নির্বাচিত করলো। যখন তারা একটি ভয়াবহ ভূমিকম্পে আক্রান্ত হলো তখন মূসা বললোঃ “হে প্রভু! তুমি চাইলে আগেই এদেরকে ও আমাকে ধ্বংস করে দিতে পারতে। আমাদের মধ্য থেকে কিছু নির্বোধ লোক যে অপরাধ করেছিল সেজন্য কি তুমি আমাদের সবাইকে ধ্বংস করে দেবে? এটি তো ছিল তোমার পক্ষ থেকে একটি পরীক্ষা, এর মাধ্যমে তুমি যাকে চাও পথভ্রষ্ট করো আবার যাকে চাও হেদায়াত দান করো। তুমিই তো আমাদের অভিভাবক। কাজেই আমাদের মাফ করে দাও এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করো। ক্ষমাশীলদের মধ্যে তুমিই শ্রেষ্ঠ। আর আমাদের জন্য এ দুনিয়ার কল্যাণ লিখে দাও এবং আখেরাতেরও, আমরা তোমার দিকে ফিরেছি।” জওয়াবে বলা হলোঃ “শাস্তি তো আমি যাকে চাই তাকে দিয়ে থাকি, কিন্তু আমার অনুগ্রহ সব জিনিসের ওপর পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে। কাজেই তা আমি এমন লোকদের নামে লিখবো যারা নাফরমানী থেকে দূরে থাকবে, যাকাত দেবে এবং আমার আয়াতের প্রতি ঈমান আনবে। ৭/১৪৮-১৫৬
মূসার জাতির মধ্যে এমন একটি দলও ছিল, যারা সত্য অনুযায়ী পথনির্দেশ দিতো এবং সত্য অনুযায়ী ইনসাফ করতো। ৭/১৫৯

No comments:

Post a Comment